প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০১১ সালে তৃণমূল সরকারের আসার পর বিরোধী দল থেকে বহু জনপ্রতিনিধিকে ভাঙিয়ে নিজেদের দলে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, যদি কেউ কোনো দলের টিকেটে জিতে বিধায়ক হন, তাহলে তারপর যদি তিনি দলবদল করেন, তাহলে তাকে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। কিন্তু তৃণমূল এই সমস্ত কিছু নিয়ম মানেনি। বরঞ্চ যিনি অধ্যক্ষ রয়েছেন, তিনি দল দাসের মত আচরণ পালন করে বিধানসভার ভেতরে এক কথা বলেন। আবার বাইরে সেই দলবদলু বিধায়করা তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেও, স্পিকার তা দেখতে পান না। তবে ২০২১ সালে বিজেপি বিরোধী দলের ক্ষমতা দখল করার পরেই মুকুল রায়, যিনি বিজেপির টিকেটে জিতেছিলেনহ তিনি পরবর্তীতে দলবদল করে তৃণমূলে যোগদান করার পরেও কেন তাকে পদত্যাগ করার কথা বলা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তবে অধ্যক্ষ আবার লজ্জা শরমের তোয়াক্কা না করে বিধানসভার ভেতরে মুকুল রায়কে বিজেপির বিধায়ক বলেই জানিয়ে দেন। আর অধ্যক্ষের এই ধরনের আচরণ নিয়ে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অবশেষে আজ সেই মামলায় বিরাট জয় পেয়েছেন তিনি। আদালতের নির্দেশে খারিজ হয়ে গিয়েছে মুকুন রায়ের বিধায়ক পদ। আর তারপরেই যারা ২০২১ সালের পর ক্ষমতার আশায় শাসকের চাপের কাছে মাথা নত করে বিজেপির টিকিটের জিতে পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন, এবার সেই সমস্ত দলবদলুদের নাম করে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

২০১১ সাল থেকে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিরোধী দলের বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিজেদের দলে টানতে শুরু করেছিল। সেই সময় বাম এবং কংগ্রেস বহু চেষ্টা করেও তা আটকাতে পারেনি। তবে ২০২১ সালের পরে মুকুল রায়কে দিয়ে সেই কাজ করানোর চেষ্টা শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথমে মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে জিতলেও, পরবর্তীতে তাকে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়। আর তারপর অধ্যক্ষ বিধানসভায় বলেন যে, মুকুল রায় তো বিজেপির বিধায়ক। কিন্তু এই দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে অবশেষে আজ বিরাট জয় পেলেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে দলত্যাগ বিরোধী আইনের কারণে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, যারা মুকুল রায়ের পর কিছু পাওয়ার আশায় তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন, বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেও যারা দলবদল করা সত্ত্বেও পদত্যাগ করেননি, এবার সেই সমস্ত দল বদলু বিধায়কদেরও চাপ বাড়িয়ে দিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশকে স্বাগত জানান তিনি। শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমি অত্যন্ত খুশি। আমার চার বছরের লড়াই এটা। ২০২১ সালে আমি বিরোধী দলনেতা হিসেবে লড়াই শুরু করেছিলাম। স্পিকার মুকুল রায়কে বলেছিলেন, উনি বিজেপিতেই আছেন। পরে আমি হাইকোর্টে যাই। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের বিষয় আসে। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টে এটার শুনানি হয়েছিল। আজ রায় এসেছে। এটা সংবিধানের জয়। ২০১১ সাল থেকে সিপিএম, কংগ্রেস, আরএসপি, সমাজবাদী পার্টি, ২১ এর পর থেকে বিজেপি টার্গেটে ছিল। কংগ্রেস, সিপিএম পারেনি লড়তে। মোট ৫৪ জন বিধায়ককে ভয় দেখিয়ে দলবদল করিয়েছে। আমি খুশি। এর পরের পালা, তন্ময় ঘোষ বিষ্ণুপুর, আলিপুরদুয়ারের সুমন কাঞ্জিলাল, হলদিয়ার তাপসী মন্ডল, এরা প্রস্তুত থাকুক। এর পরের পালা এদের।”