প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর নির্বাচনের আগে ক্রমশ বদলাতে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণ। বিজেপি এতদিন দাবি করে আসছিল যে, তারা সংখ্যালঘুদের ভোট চাইলেও, তাদেরকে সমর্থন করেন না। তারা বিশ্বাস করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলকে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার সব থেকে বেশি ক্ষতি করেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের, একথা তারা কবে বুঝবেন, সেই দিকেই তাকিয়ে ছিলেন বিজেপি নেতৃত্বরা। তবে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই সংখ্যালঘুদের মোহভঙ্গ যে হতে শুরু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি, তা একের পর এক ঘটনার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে। হুমায়ুন কবীরের মত বিধায়ককে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি আবার নতুন দল গঠন করার কথা বলছেন। ফলে সংখ্যালঘু ভোটে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলে যদি হুমায়ুন কবীর সত্যিই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেন, তাহলে তার দিকে যেতে পারে। আবার আর এক দিকে আইএসএফের মত দল রয়েছে। আর এসবের মধ্যেই একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপুল সমর্থন দেওয়া সংখ্যালঘু সমাজের এক বড় মাথা, তিনিও যেভাবে তৃণমূল সরকারকে অন্ধবিশ্বাস করা যে ভুল হয়েছে, তা প্রকাশ্যেই বলে ফেললেন, তাতে ২৬ এর বিধানসভা ভোটে এই সংখ্যালঘুদের ভোট না পেয়ে তৃণমূল চরম বিপাকের মুখে পড়ে যেতে পারে বলেই মনে করছেন একাংশ।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক ঘটনার মধ্যে দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা বুঝতে পেরেছেন যে, তৃণমূল সরকারের ওপর বিশ্বাস করে তারা কতটা ভুল করেছিলেন। এতদিন সংখ্যালঘুদের পুরো ভোট তৃণমূল কংগ্রেস পেয়ে এসেছিল। কিন্তু ২০২৬ এর নির্বাচনে একদিকে যখন হিন্দুরা একত্রিত হতে শুরু করেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে, ঠিক তখনই আরও একটা চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে যে, সংখ্যালঘুরাও এখন ধীরে ধীরে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে আইএসএফের মত তৃণমূল বিরোধী দল রয়েছে, যারা সংখ্যালঘুদের একত্রিত করছেন। অন্যদিকে একইভাবে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করা তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক হুমায়ুনবাবু যেভাবে নতুন দল গঠন করার কথা বলছেন এবং যেভাবে বৃহত্তর জোটের কথা বলছেন, তা যদি হয়, তাহলে সংখ্যালঘু ভোটের সামান্য অংশও যে তৃণমূল পাবে না, তা খুব ভালো মত করেই স্পষ্ট হচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে। আর এসবের মধ্যেই এবার ত্বহা সিদ্দিকীর মত সংখ্যালঘু সমাজের এক বড় মাথা, তিনিও যেভাবে তৃণমূল সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করলেন, তাতে কিন্তু চরম বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিন তৃণমূল সরকারের প্রতি চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের মন ভেঙে গিয়েছে। এই সরকারকে আমরা অন্ধবিশ্বাস করেছি। অন্ধবিশ্বাস করার জন্য কি আমাদের এত বড় শাস্তি পেতে হলো? মানুষ ভাবছে, এই সরকার আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। এই সরকার আমাদের সঙ্গে দু নম্বরই করলো? এর সরাসরি প্রভাব আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পড়বে।”