প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল তৃণমূল ঘটা করে সাংবাদিক বৈঠক করে হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে। আর সেই সাসপেন্ডের কারণ জানাতে গিয়ে তৃণমূলের অনেকেই বলছেন যে, হুমায়ুন কবীর সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াচ্ছেন, তিনি বিজেপির কথা মত চলছেন। কিন্তু সত্যিই কি তৃণমূল মন থেকে হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছেন? নাকি বিজেপির প্রভাব যেভাবে বাড়ছে, সামনে যেহেতু নির্বাচন, তার আগে তিনি যেহেতু বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের কথা বলেছে, তাই ভেতরে ভেতরে দুপক্ষের বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই এই সাসপেন্ড? সবটাই কি নাটক চলছে? তৃণমূল হিন্দু জাগরণ দেখে কিছুটা ভয় পেয়েই কি হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করে একটা লোক দেখানোর খেলা খেলছে? এই চর্চা গতকাল থেকে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছিল। আর আজ সেই কথাই জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার দাবি, সবটাই নাটক চলছে।
গতকাল দিনভর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে খবরের শিরোনামে ছিলেন হুমায়ুন কবীর। সবাই দেখাতে শুরু করেছিলো যে, হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে দল সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। কিন্তু এর আগেও তৃণমূল অনেককে সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু ঘটা করে সাংবাদিক বৈঠক করে এরকম সাসপেন্ড তো অতীতে দেখা যায়নি। তাহলে হুমায়ুন কবীরকে কি বাড়তি প্রচার দিয়ে দেওয়া হলো? এই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছিলো। পাশাপাশি অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, বিজেপি যেহেতু হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করছে, সেহেতু হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল হিন্দু হিন্দুদের ভোট যাতে পাওয়া যায়, তার একটা কৌশল নিয়েছে। তলায় তলায় হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে তাদের যথেষ্ট সেটিং রয়েছে। আর সময়মত এই তথ্য প্রকাশ হয়ে যাবে। তাই বিজেপি যদি তৃণমূলের এই পাতা ফাঁদে পা দেয়, তাহলে তাদের যথেষ্ট ক্ষতি হবে বলেই দাবি করেছিলেন একাংশ। আর এসবের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ডের চালাকি যে তিনি খুব ভালো করেই ধরে ফেলেছেন, ভেতরের খবর দিয়ে তা জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই বাবরের নামে মসজিদের প্রবল বিরোধিতা করেন তিনি। আর তারপরেই হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড নিয়ে যে মাতামাতি করা হচ্ছে, সেটা যে আসল খবর নয়, তা স্পষ্ট করে দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমি আপনাদের আগাম পূর্বাভাস দিচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের বোকা বানানোর জন্য লোক দেখানো সাসপেন্ড হয়েছে। আগামীকাল এই বিতর্কিত নামে, বিতর্কিত একটি তারিখে ঠিক করে শিলান্যাস মমতা ব্যানার্জির পুলিশ করতে দেবে। আমি আপনাকে ভেতরের খবর বলে গেলাম। মমতা ব্যানার্জির মুখ আর মুখোশ আলাদা। আপনি মিলিয়ে নেবেন, কালকে এতটার সময়।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী আগেভাগেই বুঝে গিয়েছেন, তৃণমূলের খেলাটা। তাই বিজেপির মধ্যে যারা উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন যে, হুমায়ুন কবীর বুঝি তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে সাসপেন্ড হয়ে এখন বড় কোনো পদক্ষেপ নেবেন, তারা একটু ভুল ভেবেছিলেন। তাই আজ শুভেন্দু অধিকারী সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সকলকেই সতর্ক করে বুঝিয়ে দিলেন যে, তৃণমূলের এই সাসপেন্ড আসলে নাটক ছাড়া আর কিছু নয়। আর তৃণমূলের তৈরি করা এই ফাঁদে যে বিজেপি কোনোমতেই পা দেবে না, সেই ব্যাপারেও যথেষ্ট সজাগ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।