প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
সম্প্রতি নেপাল উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। আর তার কিছুটা হলেও প্রভাব শিলিগুড়ি সহ সীমান্তবর্তী এলাকায় পড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে যাওয়ার দিনেই নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উত্তরকন্যায় রাত কাটিয়েছেন। অন্তত তৃণমূলের পক্ষ থেকে তেমনটাই দাবি করে বলা হচ্ছে যে, মুখ্যমন্ত্রী এতটাই মানবিক যে, তিনি ঝড় হোক, দুর্যোগ হোক, মানুষের পাশে রাত জেগে পাহারা দেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী নিজেও গতকাল উত্তরবঙ্গের সভা থেকে দাবি করেছেন যে, তিনি উত্তরকন্যায় সারারাত জেগে ছিলেন মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তিনি কোনো দুর্যোগে মানুষকে ফেলে যান না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই সমস্ত কথাবার্তা বলছে, নিজে ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন পাল্টা এমন কিছু মন্তব্য করে বসলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, যার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, মুখ্যমন্ত্রী কি কারণে উত্তরকন্যায় অত রাতে গিয়েছিলেন? সত্যিই কি তিনি নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে শিলিগুড়িতে বা রাজ্যে কোনো আঁচ যাতে না আসে, তার জন্য যাননি? এর পেছনে কি অন্য কোনো কারণ রয়েছে?
এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, চোখে যেটা দেখা যায়, সেটাই সত্যি। মুখ্যমন্ত্রী অত রাতে উত্তরকন্যায় গিয়েছিলেন। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই তো গিয়েছিলেন। সেটা নিয়ে এত বেশি প্রশ্ন তোলার কি আছে? কিন্তু না। এই প্রশ্ন আমরা তুলছি না। এই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারী। আসলে শুভেন্দুবাবু প্রতিমুহূর্তে এই রাজ্যের সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী কোথায় কি করেন, তার গোপন তথ্য আগে থেকেই ফাঁস করে দেন। তবে গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরকন্যায় রাত জাগা নিয়ে পুরো তথ্য ফাঁস না করলেও, যে ইঙ্গিতবহ বার্তা দিলেন, তাতে মানুষের মনে ধোঁয়াশা আরও বেড়ে গিয়েছে।
শুভেন্দুবাবুকে গতকাল আসানসোলে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন যে, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যায় অতটা রাত কাটিয়েছেন, তিনি নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনি নিজের মুখেই সেই কথা বলেছেন। আর সাংবাদিকদের সেই কথা শুনেই পাল্টা জবাব দিয়ে বসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কালকে ওখানে কি করেছেন, সবাই জানে। আমি বলতে চাইছি না। ওখানে কি করেছেন রাত্রে গাড়ি নিয়ে, আমরা সব জানি। প্রয়োজন হলে বলব। আজকে বলছি না।”
আর এই ছোট্ট মন্তব্যের মধ্যে দিয়েই শুভেন্দু অধিকারী হাজার গুণ জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন বঙ্গ রাজনীতিতে। সকলের মধ্যেই এখন একটা কৌতুহল তৈরি হয়েছে, ঠিক কি করতে মুখ্যমন্ত্রী তাহলে উত্তরকন্যায় গিয়েছিলেন? শুভেন্দুবাবু যদি গোপন তথ্য জেনে থাকেন, তাহলে অবিলম্বে তার তা মানুষকে জানানো উচিত। কারণ সাধারণ মানুষ জানতে চায় যে, মুখ্যমন্ত্রী কতটা জনতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন? নেপালের অশান্তির জন্য তিনি এতটাই চিন্তাশীল হয়ে পড়েছিলেন যে, উত্তরকন্যায় রাত পর্যন্ত কাটিয়ে দিলেন! নাকি মানুষ সামনে যেটা দেখছে, সেটার সবটাই ভাওতা! পেছনে রয়েছে গোপন কোনো সত্য? যেটা শুভেন্দু অধিকারী কিছুটা আভাস দিয়ে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন বঙ্গ রাজনীতিতে।