প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন টালমাটাল রাজ্য, যখন শিক্ষা ব্যবস্থার একটা অংশকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দাবি করছে বিরোধীরা, ঠিক তার মাঝেই শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের নিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। যেখানে বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শিক্ষকরা এখন পেশাদার হয়ে গিয়েছেন মানুষ গড়ার কারিগর নয় বলে মন্তব্য করলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তার সরকারের আমলে যখন শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতি চলছে, যখন অবৈধ নিয়োগ চলছে, তখন কি করে মানুষ গড়ার কারিগর তৈরি হবে, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। যাকে কেন্দ্র করে রীতিমত সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি।

সূত্রের খবর, শুক্রবার বরানগরের একটি ওয়ার্ডে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান ছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। আর সেই অনুষ্ঠানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষকদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন তিনি। সৌগত রায় বলেন, “শিক্ষক অনেক হচ্ছে। অনেক পেশাদার শিক্ষক হচ্ছে। কিন্তু মানুষ গড়ার কারিগর হচ্ছে না। মাইনে তো অনেক বাড়িয়েছি। কিন্তু টিউশনি কি বন্ধ করতে পেরেছি? এখন ঠিকই, শিক্ষকদের আন্দোলনে বাস জ্বলে না। কিন্তু সেই ডেডিকেশনটা কমে গিয়েছে।”

তবে এখানেই থেমে থাকেননি বর্ষীয়ান এই তৃণমূল সাংসদ। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে চারিদিকে যা চলছে, যেভাবে দুর্নীতিতে বিদ্ধ হচ্ছে রাজ্য সরকার, তা নিয়েও কৌশলী মন্তব্য করেছেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, “শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে সমস্ত প্রশ্ন উঠছে, আমি তার মধ্যে যেতে চাই না। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে, আমাদের দেশে এটা হচ্ছে। আমি নিজেকে প্রশ্ন করি, আমি নিজে ৩৫ বছর কলেজে পড়াতাম। সত্যিই কি শিক্ষার উন্নতি হয়েছে? আমার নিজের মনের উত্তর হচ্ছে, না। কিছু উন্নতি করার একমাত্র উপায় কিছু টাকা বাড়িয়ে দেওয়া নয়। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন শিক্ষা পেশা ছিল না, একটা মিশন ছিল।”

আর সৌগতবাবু যখন এই কত ধরনের কথা বলছেন, তখন তাকে পাল্টা খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, শিক্ষা মিশন থেকে বিচ্যুত হয়ে পেশার দিকে এগিয়েছে তো তৃণমূল সরকারের জন্যই। সৌগতবাবু কি কৌশলীভাবে নিজের সরকারকেই আক্রমণ করে বসলেন? টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে, আদর্শ বিচ্যুত হওয়ার কথা বলে তিনি কি বোঝাতে চাইলেন? তার সরকারের আমলেই তো শিক্ষা ব্যবস্থা লাটে উঠেছে। তাহলে সেই সরকারের একজন প্রতিনিধি হয়ে, তৃণমূলের একজন সাংসদ হয়ে তাকেও তো দায় নিতে হবে। অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা।