প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এক বছর হয়ে গিয়েছে অভয়ার মৃত্যুর। কিন্তু তারপরেও রাজ্যের প্রশাসন হোক বা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, কেউ তদন্তের সঠিক কিনারা করতে পারেনি। যার ফলে রাজ্য প্রশাসনের ওপর তো ভরসা তারা অনেকদিন আগেই হারিয়ে ফেলেছিলেন। সম্প্রতি সিবিআইয়ের পদক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল অভয়ার পরিবার। যার ফলে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে শুরু করেছিল। আর তার মধ্যেই এবার যে পরিবার নিজেদের মেয়েকে হারিয়েছে, সন্তানহারা হিসেবে যে বাবা, মায়ের মধ্যে দুঃখ বেদনা রয়েছে, সেই অভয়ার বাবার বিরুদ্ধেই এবার মানহানির মামলা করে বসলেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ। যার ফলে কুনালবাবুর কান্ডজ্ঞান নিয়ে এমনিতেই বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে বিরোধীদের, তবে এই ঘটনার পর সেই কুনাল ঘোষকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে ছাড়ছে না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

তবে সব থেকে বড় প্রশ্ন যে, কুনালবাবু হঠাৎ করেই অভয়ার বাবার বিরুদ্ধে এই মানহানির মামলা করতে গেলেন কেন? তারা নিজেদের মেয়েকে হারিয়ে বিচার চেয়েছিলেন! কেন কুনালবাবু সেই অভয়ার পরিবারের বিরুদ্ধেই মামলা করে নিজেকে বিতর্কের শিরোনামে নিয়ে চলে এলেন? তবে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে কয়েকদিন আগে যেতে হবে। যেখানে কিছুদিন আগেই অভয়ার বাবা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি এটাও দাবি করেছিলেন যে, সিবিআইকে টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। আর সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে সমস্ত সেটেলমেন্ট করে এসেছেন কুনাল ঘোষ। আর এই মন্তব্যের পরেই কুনালবাবুর পক্ষ থেকে অভয়ার বাবাকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে চার দিনের মধ্যে জবাব না দিলে তিনি মানহানির মামলা করবেন বলেও হুশিয়ারি দেন কুনাল ঘোষ। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার সেই অভয়ার বাবার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন তিনি।

বলা বাহুল্য, অভয়ার বাবা সিবিআইকে টাকা দিয়ে সেটিং করার ক্ষেত্রে কুনাল ঘোষকে দায়ী করার পরেই কুনালবাবু পাল্টা তার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও নাটকের অভিযোগ করেছিলেন তিনি। আর তখনই কুনাল ঘোষ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, চার দিনের মধ্যে যদি জবাব না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি মানহানির মামলা করবেন। আর সেই কারণেই এবার ব্যাংকশাল আদালতে তৃণমূল নেতা অভয়ার বাবার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন। তবে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন যে, এত বড় স্পর্শকাতর ঘটনার পর এত দড়ি টানাটানির কি কোনো দরকার ছিল? অভয়ার পরিবার কোন মানসিক পরিস্থিতিতে আছে, সেটা কি কেউ বুঝবে না? তারা নিজেদের মেয়েকে হারিয়েছেন। তারপর এক বছর ধরে তারা বিচারের দিকে তাকিয়ে আছেন। কিন্তু বিচার হয়নি বলেই তো তারা এই ধরনের কথা বলছেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে সেই অভয়ার পরিবারকেই আরও যন্ত্রণার মধ্যে ফেলে তার বাবাকে যেভাবে মামলার জালে জড়িয়ে দেওয়া হলো, এটা কি জনমানসে খুব ভালো বার্তা গেল? প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ নেটিজনেরাই।