প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভাতা, ভর্তুকি দিতে ওস্তাদ। কিন্তু রাজ্যের বেকারদের চাকরি দিতে, শিল্প পরিকাঠামো গঠন করতে তার সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। আসলে তিনি ভোট পাওয়ার রাজনীতি করেন। সেই জন্য লক্ষীর ভান্ডারের কিছু টাকা এবং ক্লাবগুলোকে দুর্গা পুজোর সময় কিছু আর্থিক অনুদান দিয়ে তাদের ভোট কিনে নেওয়ার কৌশল ভালো করেই তৈরি করে নিয়েছেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বিভিন্ন সময় এই বিষয়ে সরব হয় রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। কিন্তু যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকটি প্রশাসনিক সভায় দাবি করেন যে, রাজ্যের কোষাগার শূন্য, নতুন করে কিছু করা যাবে না, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না, সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কি করে দুর্গাপূজোর আর্থিক অনুদান এক লাফে এতটা বাড়িয়ে দেন? তাহলে কি শুধুমাত্র ২০২৬ এর নির্বাচনে টিকে থাকার জন্যই ক্লাব গুলিকে আর্থিক অনুদান এতটা বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করতে দেখা গেল তাকে?

বস্তুত, আজ মুখ্যমন্ত্রীর নেতাজি ইন্ডোরে দুর্গাপুজো কমিটিকে গুলোকে নিয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল‌। প্রত্যেক বছরই তিনি ক্লাবগুলোকে নিয়ে এই বৈঠক করেন এবং ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্লাবগুলোকে দুর্গাপুজোর জন্য একটা মোটা অংকের আর্থিক অনুদান দেন। গত বছরই তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এই বছর ১ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এবার সেই ১ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে উঠে চলতি বছরে দুর্গাপুজোর জন্য ক্লাব কমিটিগুলোকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর প্রশাসনিক প্রধানের এই ঘোষনায় রীতিমত উচ্ছ্বসিত বিভিন্ন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

তবে দূর্গাপূজার জন্য ক্লাবগুলোকে এই অর্থনৈতিক সহযোগিতার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী করলেও একাংশ কিন্তু মোটেই এই বিষয়টি ভালো চোখে নিচ্ছেন না। বিরোধীদের দাবি, এসব করে আদৌ কি কোনো লাভ হবে? যখন ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হত না, তখন কি রাজ্যে দুর্গাপুজো হত না? সবকিছুই তো স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মানুষের অভ্যাসটাই বদলে দিতে চাইছেন। কিছু কিছু করে আর্থিক অনুদান দিয়ে তার সরকারের ওপর যাতে সকলে নির্ভরশীল হয়ে থাকেন, তার চেষ্টা করছেন। ২০২৬ এর নির্বাচনে কোনোভাবেই জয়লাভ করা যাবে না, তিনি খুব ভালো মতই জানেন। তার জন্য এবারের দুর্গাপুজোর আগে ক্লাব কমিটিগুলোকে আরও বেশি করে আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। কিন্তু যে রাজ্যে হিন্দুরা প্রতিমুহূর্তে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, সেই রাজ্যে শুধুমাত্র এই ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান দিয়ে কি লাভ? যেখানে মানুষ নির্যাতিত হন, যেখানে মহিলারা অত্যাচারিত হন, সেখানে শুধুমাত্র ভোট নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই সমস্ত চমকপ্রদ ঘোষণা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের।