প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীরা যেভাবে জেলে যেতে শুরু করেছে, যেভাবে দুর্নীতিতে নাম জড়াতে শুরু করেছে বিভিন্ন ব্যক্তির, তাতে রীতিমত অস্বস্তিতে শাসক দল। বর্তমানে সবথেকে বেশি চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে নিয়ে। আজ তার জামিনের মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। আগামী ২০ তারিখ সেই মামলার শুনানি হবে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। যেখানে নাম রয়েছে সেই চন্দ্রনাথ সিনহার। বিরোধীরা কার্যত আত্মবিশ্বাসী যে, রাজ্যের এই মন্ত্রীর জেলে যাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। আর গতকালই অমিত শাহের সঙ্গে দিল্লি থেকে বৈঠক করে ফেরার পরেই আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী যে সমস্ত মন্তব্য করলেন, তাতে শুধু চন্দ্রনাথ সিনহা নয়, তার দলের সর্বোচ্চ নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক চাপ অনেকটাই বেড়ে গেল।
আজ গোটা রাজ্যবাসীর নজর ছিল ইডির বিশেষ আদালতের দিকে। সেখানে কি হয়, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জেলে থাকেন, নাকি বেল পান, তা নিয়ে কৌতুহল ছিল গোটা বাংলা। আর তার মাঝেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাংবাদিকরা সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি আরও বেশি করে নিশ্চিত করে দেন যে, চন্দ্রনাথ সিনহার শাস্তি পাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। ঠিক কি বললেন শুভেন্দু অধিকারী? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “চন্দ্রনাথ সিনহার বিরুদ্ধে চার্জশিটেই তো লেখা আছে, কেন চার্জশিট! প্রথম কথা হচ্ছে, চাকরি বেঁচেছেন, আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, কালেকশন করেছেন। আর তৃতীয় কথা হচ্ছে, নিজের এবং স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পত্তি করেছেন। এদের প্রত্যেকের তো আয়ের থেকে বেশি সম্পত্তি। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তার পরিবারের লোকের থেকে শুরু করে প্রত্যেকের আয়ের থেকে বেশি সম্পত্তি।”
তবে এরপরই সাংবাদিকরা আরও একটি প্রশ্ন করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে। গোটা রাজ্যের মানুষের মনে যে প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে, সেটাই আজ শুভেন্দু অধিকারীকে করে বসেন সাংবাদিকরা। তারা বলেন যে, শেষ পর্যন্ত কি শাস্তি হবে রাজ্যের এই মন্ত্রীর? কারন, বারবার ডাকাডাকিতেই তো বিষয়টি থেমে যাচ্ছে। রাজ্যের মানুষ তো তাদের শাস্তি দেখতে চাইছে। সেটা হবে তো? আর সেই প্রশ্নের উত্তরে কার্যত শুভেন্দু অধিকারী যে মন্তব্য করলেন, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার কাছে এখন আর বিকল্প কোনো উপায় নেই। তাকে শাস্তির মুখে পড়তেই হবে। কি বললেন শুভেন্দুবাবু? শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “কিসের ডাকাডাকি! চার্জশিটে আছে মানেই তো এবার ফাইনালি ট্রায়ালে ওকে ফেস করতে হবে। আর ট্রায়ালে ফেস করলেই কনভিকশন হবে।”
বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তদন্ত হয়। কিন্তু দিনের শেষে যারা প্রকৃত দোষী, যারা মূল ঘটনা ঘটিয়েছে, যারা টাকার বিনিময় চাকরি দিয়েছে, তাদের অনেকেই এখনও পর্যন্ত জেলে যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যে কোমর বেঁধেই পথে নেমেছে, তা একের পর এক ঘটনার মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার রাজ্যের আর এক মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, তার বিরুদ্ধেও চার্জশিট জমা পড়ে গেল। স্বাভাবিকভাবেই একটা সংশয় অনেকের মধ্যেই আছে যে, শেষ পর্যন্ত তার শাস্তি হবে কিনা! কিন্তু রাজ্যের এই মন্ত্রীর শাস্তি পাওয়া যে শুধু সময়ের অপেক্ষা, সেই কথা বলার পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তার পরিবারকেও কার্যত দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মারাত্মক মন্তব্য করে বসলেন শুভেন্দু অধিকারী।