প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তৃণমূলের শেখ শাহজাহান। কত মানুষের ওপর তিনি অত্যাচার করেছেন, কিভাবে মানুষের টুটি চিপে ধরে মুখ বন্ধ করে রেখেছিলেন, কিভাবে মানুষকে ভয় দেখিয়েছিলেন, সেই সম্পর্কে গোটা তথ্য এখন রাজ্যবাসী জেনে গিয়েছে। তবে জেলে থেকেও কি প্রভাব বিস্তার করছেন সেই শেখ শাহজাহান, গতকাল যে ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর যে অভিযোগ উঠছে, তারপর একটাই প্রশ্ন যে, কেন এখনও এত প্রভাব রয়েছে এই শাহজাহানের? জেলে থাকার পরেও তিনি কি করে সাক্ষীদের ভয় দেখাচ্ছেন? কি করে ভোলানাথ ঘোষের মত অন্যতম সাক্ষীকে প্রাণে মেরে ফেলা দেওয়ার মত চেষ্টা হলো? নাকি গোটা ঘটনাটাই নিছক দুর্ঘটনা? তবে ভোলানাথবাবুর বক্তব্য যেভাবে সামনে আসছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, এর পেছনে শেখ শাহজাহানের মাথা রয়েছে এবং তিনি তাকে শেষ করে দেওয়ার একটা বৃহৎ পরিকল্পনা করেছিলেন। এখন তদন্তে কি উঠে আসে, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে রাজ্যবাসীরা। তার মধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি যে কথা বলে দিলেন, তারপর সকলেই বলছেন, সত্যিই তো তাই। শেখ শাহাজাহানের মত মানুষের বিরুদ্ধে কেউ যদি কথা বলে, কেউ যদি সাক্ষী হয়, তাহলে কি সত্যিই তার বেঁচে থাকার অধিকার আছে? তাকে তো এভাবেই প্রাণে মেরে ফেলে দেওয়ার একটা চেষ্টা হবে। আর সেই ঘটনাই এখন করতে চাইছেন জেলে বসে থাকা শেখ শাহজাহান বলে বুঝিয়ে দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।

গতকাল শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষ আদালতে যাওয়ার পথে তার গাড়িতে একটি ট্রাক এসে ধাক্কা মারে। এখন অনেকে বলতেই পারেন, এটা একটা দুর্ঘটনা। কিন্তু এমন একটা সময়কে বেছে নেওয়া হলো, যখন ভোলানাথবাবু শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে সাক্ষী হয়ে আদালতে যাচ্ছিলেন। তাহলে কি তিনি বড় কোনো তথ্য ফাঁস করে দিতে পারেন, সেজন্যই তাকে প্রাণে মেরে ফেলে দেওয়ার একটা চেষ্টা হয়েছিল? এই প্রশ্ন বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে। আর তার মধ্যেই শেখ শাহজাহানের যে ভয়ংকর দাপট এখনও রয়েছে এবং কিভাবে তিনি মানুষের ওপর জেলে থেকেও প্রভাব বিস্তার করছেন, সেই ব্যাপারে ভয়ংকর অভিযোগ করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। পরিস্কার ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, শেখ শাহজাহান মানেই তৃণমূল, আর তৃণমূল মানেই শেখ শাহজাহান। আর তাই এই শেখ শাহজাহানের মত মানুষের বিরুদ্ধে কেউ যদি সাক্ষী হয়, তাহলে তাকে এভাবেই প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা হবে। এভাবেই তার মুখ বন্ধ করে দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করবে শাহজাহান বাহিনীরা।

এদিন শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা এবং তার ছেলে ও ড্রাইভারের মৃত্যু নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বড় মন্তব্য করে বসেন শমীকবাবু। তিনি বলেন, “ভোলানাথ ঘোষকে টার্গেট করেছিলো। সাক্ষী লোপাট করতে হবে। ভোট পরবর্তী হিংসায় যে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে, সেখানে পুলিশ বাড়িতে গিয়ে যারা সাক্ষী আছে, তাদের প্রমাণ লোপাটের কাজ করছে। সুতরাং এটা তো পশ্চিমবঙ্গে চলছে। শেখ শাহজাহান তৃণমূলের তৈরি করা। শেখ শাহজাহানই তৃণমূল, তৃণমূলই শেখ শাহজাহান। তাহলে সেই শাহজাহানের বিরুদ্ধে একজন সাক্ষ্য দেবে আর তার বেঁচে থাকার কি কোনো অধিকার আছে? তাই এই আক্রমণ।”