প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এমনিতেই এসআইআরের আতঙ্কে রীতিমতো কাঁপতে শুরু করেছে। যেভাবেই হোক, এসআইআরকে আটকাতে না পেরে এখন তৃণমূল রীতিমত দিশেহারা। তাদের নেতারা একজন ভোটারেরও নাম বাদ গেলে বাংলায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে অনেক হুমকি, হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করছেন। তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি বারবার করে দাবি করছে যে, রাজ্যে প্রচুর অবৈধ ভুয়ো ভোটার রয়েছে। অনেক মৃত ভোটার রয়েছে। অনেক জায়গাতেই এক ব্যক্তির নাম দুই তিন বার করে রয়েছে। ফলে এদের নাম এসআইআরের মধ্যে দিয়ে বাদ চলে যাওয়ার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তৃণমূলের মধ্যে। আর সেই কারণেই তারা এই এসআইআরের বিরোধিতা করছে। তবে শুধু আর মুখের কথায় নয়, যখন হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে শহর কলকাতা জুড়ে, ঠিক তার আগেই আজ নির্বাচন কমিশনে একেবারে দিস্তা দিস্তা কাগজ নিয়ে তথ্য প্রমাণ হাতে করে পৌঁছে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা নিঃসন্দেহে পাকাপাকিভাবে শীত পড়ার আগেই তৃণমূলের হাড় কাঁপিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট বলেই মনে করছে বিরোধীরা।

এসআইআর হওয়ার পর থেকেই সেই দিকে কড়া নজর রেখেছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। প্রতিনিয়ত প্রত্যেকটি সভা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করছেন যে, এসআইআর হলে অবৈধ ভোটার, মৃত ভোটার, এমনকি রোহিঙ্গা বাংলাদেশী আর একাধিক জায়গায় একজন ব্যক্তির নাম যেভাবে রয়েছে, তাদের সকলের নাম বাদ যাবে। তবে তৃণমূল পাল্টা দাবি করতে শুরু করেছিল যে, শুভেন্দু অধিকারীর এই কথার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে বাংলার সাধারণ নাগরিকদের নাম কাটার ব্যবস্থা করছেন। তবে তৃণমূলের এই অভিযোগ যে একেবারে মিথ্যে, তিনি যে কথা বলছেন, তাই যে সত্যি এবং তৃণমূল যে এতদিন অবহিত ভোটার এবং ডবল এন্ট্রি ভোটারদের নিয়েই একের পর এক নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে, তা একেবারে তথ্য প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের রীতিমত হাতে দিস্তা দিস্তা কাগজ নিয়ে পৌঁছে যান শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা। প্রত্যেকের হাতেই প্রচুর কাগজের দিস্তা দেখতে পাওয়া যায়।

কিন্তু যে সমস্ত কাগজ শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাদের হাতে রয়েছে, সেগুলো কিসের তথ্য? শুভেন্দুবাবু রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে প্রবেশের আগেই জানিয়ে দেন যে, রাজ্যের ৫ টি লোকসভা কেন্দ্রের তথ্য এখানে রয়েছে। যেখানে প্রায় ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার গরমিলের স্পষ্ট যোগ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আর তাই সেই সমস্ত তথ্য তিনি কমিশনের নজরে আনতে চান জন্যেই সেগুলোকে বান্ডিল করে তারা আজ কমিশনের কাছে সেই সমস্ত কর্মীদের তথ্য জমা দিতে এসেছেন। অর্থাৎ কোথাও যদি এসআইআরের ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যায় এবং তৃণমূল যাতে চালাকি করে অবৈধ ভোটারদের নাম কোনোভাবেই রাখতে না পারে, তার জন্য এসআইআর প্রক্রিয়া যখন চলছে, ঠিক তার মধ্যেই রাজ্যের পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রের প্রায় ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার গরমিলের তথ্য হাতেনাতে তুলে ধরে তাদের নাম আগেভাগেই বাতিল করার পথে হেঁটে তৃণমূলের কাঁপুনি ধরিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।