প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করে আসছেন, কম করে হলেও ১ কোটির কাছাকাছি নাম বাদ যাবে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে এতদিন অনেক অবৈধ ভোটার, ভুয়ো ভোটার, মৃত ভোটার, বাংলাদেশী মুসলমানদের নাম ভোটার তালিকায় রেখে দেওয়া হয়েছিল। আর এসআইআরের ফলে তাদের নাম বাদ গেলে সেই সংখ্যাটা ১ কোটির কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে প্রতিনিয়ত দাবি করে আসছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মাঠে হঠাৎ করে একটি খবর রটতে শুরু করে দেয় যে, ১০ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। তবে সেই দিনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, অপেক্ষা করুন, এটা সঠিক তথ্য নয়। ৮০ শতাংশ এসআইআর হলেও পশ্চিমবঙ্গে ১ কোটির কাছাকাছি নাম বাদ যাবে, এটা নিশ্চিত। আর বর্তমানে এসআইআর প্রক্রিয়ায় যে তথ্য সামনে এলো, তাতে সকলেই বলছেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর সেই কথাই কি এবার বাস্তবের রূপ নিতে চলেছে?

ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সহ যে ১২ টি রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে, সেখানে কিছুটা সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে নির্বাচন কমিশন। যার ফলে অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন যে, পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর ঠিকমত হচ্ছে না, অনেক জায়গাতেই জল মিশিয়ে দিচ্ছে তৃণমূলের দলদাস প্রশাসন অনেক জায়গাতেই তৃণমূলের আইপ্যাক নামক পরামর্শদাতা প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিএলওদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অবৈধ মুসলমানদের নাম যাতে সিস্টেমে আপলোড করা যায়, তার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই সেই বিষয়টিকে আরও খুঁটিনাটি ভাবে সরজমিনে দেখতেই কমিশনের এই সিদ্ধান্ত। তবে একটা অংশ এই কথা বললেও, অনেকে আবার ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। আর এসবের মধ্যেই এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে এসআইআরের যে প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে, যতটা কাজ হয়েছে, আর তার থেকে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা রীতিমত চমকে দেওয়ার মত। আর এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলাই যায় যে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা যে এক কোটির কাছাকাছি নাম বাদ যেতে পারে বলে প্রতিনিয়ত মন্তব্য করে আসছিলেন, হয়তো সেটাই এবার বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। কিন্তু কি সেই তথ্য?

সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে এসআইআরের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া প্রায় ৯৮ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। খুব দ্রুত পশ্চিমবঙ্গে এই এসআইআর সংক্রান্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে। ‌তবে সকলেরই প্রশ্ন যে, এখনও পর্যন্ত কত মানুষের নাম বাদ গেল ভোটার তালিকা থেকে? জানা গিয়েছে, এসআইআর প্রক্রিয়ায় এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে প্রায় ৫০ লক্ষ ২২ হাজার মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। যার মধ্যে মৃত ২৩ লক্ষ এবং স্থানান্তরিত ভোটারের সংখ্যা ১৭ লক্ষ। আর এই তথ্য সামনে আসার পরেই একাংশ বলছেন, প্রাথমিকভাবে যদি ৫০ লক্ষ নাম বাদ যায়, তাহলে তো বোঝাই যাচ্ছে যে, এরপরে হেয়ারিং আছে। আর সেই হেয়ারিংয়ের সময় অনেক রাজনৈতিক দল অনেক অভিযোগ করবে। বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং তার দল বিজেপি যে ইতিমধ্যেই অবৈধ ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত সকলেই। তাই ৯৮ শতাংশ ডিজিটাইজেশনের পর যদি এই সংখ্যাটা ৫০ লক্ষ পার হয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে যে হেয়ারিংয়ের পর তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা কেউ আঁচ করতে পারছেন না। আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারী ১ কোটির কাছাকাছি নাম বাদ যেতে পারে বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটাই বাস্তবের রূপ নিতে চলেছে? সংখ্যার দিকে নজর থাকবে গোটা রাজ্যবাসীর।