প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এসআইআর একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু যেভাবে দেশের কিছু বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল অযাচিতভাবে এই এসআইআরের বিরোধিতা করছে, তাতে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বর্তমানে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এসআইআর হচ্ছে। কিন্তু কোথাও তৃণমূলের মত এইভাবে বিজেপি বিরোধী রাজ্যেও থাকা কোনো সরকার এত বিরোধিতা করছে না। বিজেপির পক্ষ থেকেই সেই কথা উল্লেখ করে বলা হচ্ছে যে, তৃণমূল কংগ্রেস অনুপ্রবেশ কারীদের ভোটব্যাংক বলে মনে করে। আর সেই কারণেই এসআইআর হলে তাদের নাম বাদ যাবে, এই আতঙ্কেই তারা এই এসআইআরের বিরোধিতা করছে বা তাকে আটকানোর মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে। আর তৃণমূলের এই অযাচিত বিরোধিতার খবর কি খুব ভালো মতই পেয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ? সেই কারণেই কি এবার গুজরাটের মাটি থেকে সেই অনুপ্রবেশ থেকে শুরু করে এসআইআর ইস্যু নিয়ে ঘুরিয়ে তৃণমূলের মত রাজনৈতিক দলকেই বার্তা দিলেন তিনি?
গোটা দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যের ইতিমধ্যেই এসআইআরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিহারেও নির্বাচনের আগে এসআইআর হয়েছে। তারপরেই নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে এই এসআইআরের বিরোধিতা এখানকার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন, তা কার্যত বেনজির বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির মধ্যেও প্রশ্ন উঠছে যে, এত বিরোধিতা কেন করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তাহলে কি তিনি অনুপ্রবেশকারীদের বাংলার মাটিতে রেখে দিতে চাইছেন? এসআইআর হওয়ার পর যেভাবে সীমান্তে বাংলাদেশিদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতেই তো স্পষ্ট যে, বাংলায় এতদিন অনুপ্রবেশকারীরা ভর্তি হয়েছিল। আর এসআইয়ার হওয়ার ফলে তাদের বিতারণের প্রক্রিয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে জন্যই কি যাতে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা না হয়, তার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান? এতদিন বঙ্গ বিজেপির নেতারা এই সমস্ত আক্রমণ তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের নেত্রীর উদ্দেশ্যে করতেন। কিন্তু আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে বক্তব্য রাখলেন গুজরাটের মাটি থেকে, তাতে সকলেই প্রায় নিশ্চিত যে, তিনি তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে এসআইআর নিয়ে যে পরিমাণ বিরোধীতা তৃণমূল কংগ্রেস করছে, তাতে তাদেরকেই আক্রমণাত্মক মনোভাবের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন যে, অনুপ্রবেশকারীদের কোনোমতেই রেয়াত করা হবে না।
এদিন গুজরাটের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেখানেই একেবারে কড়া ভাষায় বিরোধী দলের একাংশকে আক্রমণ করেন তিনি। যারা এসআইআরের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে অমিত শাহ বলেন, “অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে বাধা দিচ্ছে কিছু দল। ভোটার লিস্ট শুদ্ধিকরণে এসআইআরেরও বিরোধিতা করছে।” আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বর্তমানে বিজেপি বিরোধী অনেক রাজনৈতিক দল হয়ত এসআইআরের বিরুদ্ধে কথা বলছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে রাস্তায় নামছে, যেভাবে এসআইআর আটকানোর জন্য হুমকি, হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তাদের নেতারা, এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে এসআইআর স্থগিতের আবেদন জানিয়েছেন, তাতে অমিত শাহের এই মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের উদ্দেশ্যেই হতে পারে। আর তা যদি হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই আক্রমণাত্মক মন্তব্য আগামী দিনে তৃণমূল বিরোধীতার ঝাঁজ যে আরও বাড়াবে এবং সামনের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে কোনঠাসা করে দিতে যে আরও একাধিক বক্তব্য এবং প্ল্যানিং সামনে এনে ঘাসফুলের ঘুম কেড়ে নেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য, সেই বিষয়ে নিশ্চিত গেরুয়া শিবিরের নেতা কর্মীরা।