প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালোমতই বুঝতে পারছেন যে, এসআইআর হলে এবং সঠিকভাবে যে পদ্ধতিতে এসআইআর প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে তার সরকার টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে যাবে। কারণ এতদিন যে অবৈধ ভোটব্যাংকের মধ্যে দিয়ে তিনি ভোট পেয়ে এসেছেন, এখন তাদের তথ্য সামনে চলে এসেছে। সীমান্তে যে সমস্ত অবৈধ বাংলাদেশিদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তারা অনেকে নাকি লক্ষীর ভান্ডার পর্যন্ত পেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন ভোটব্যাংকের রাজনীতি এতদিন পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে পড়ে এসেছেন, অনুপ্রবেশকারীদের বক্তব্যকে সামনে এনে পাল্টা কটাক্ষ করছে বিজেপি। আর তার মধ্যেই এবার এসআইআরে প্রচুর মানুষের নাম বাদ যাওয়ার আতঙ্কে কি দ্রুত সেই এসআইআর স্থগিত করার দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখলেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তবে যে প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, তাকে স্থগিত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যতই তৎপরতা দেখান না কেন, এই রাজ্যের বুকে যে এসআইআর বন্ধ হবে না এবং বর্তমান সরকার যদি অসহযোগিতা করে, তাহলে যে সেই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে এসআইআর হওয়ার পরেই ভোট হবে, বারবার সেই কথা উল্লেখ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এবার সেই রকমই ইঙ্গিত দিয়ে বড় মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের পর আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি দিয়েছেন। যেখানে এসআইআরের ফলে রাজ্যে একের পর এক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, এই কথা উল্লেখ করে সেই এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। আর এখানেই বিরোধীরা বলছেন যে, সঠিক জায়গায় আঘাত নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন। এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হতেই রাজ্য ছাড়ছে একের পর এক অবৈধ বাংলাদেশি। আর এতদিন তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্ক হয়েছিলেন জন্যই তিনি ক্ষমতায় টিকেছিলেন। এসআইআরের আতঙ্কে তারা রাজ্য ছাড়ছে, এই খবর পেয়েই যাতে সেই এসআইআর প্রক্রিয়াকেই বন্ধ করানো যায়, তার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দাবি করছে বিজেপি। তবে মুখ্যমন্ত্রী যতই চিঠি দিন না কেন, তিনি যদি এই এসআইআর প্রক্রিয়ায় তার সরকারের সময়কালে সহযোগিতা না করেন, তাহলে যে আরও করুন পরিনতি হতে পারে, এদিন তারই আভাস দিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন, সেই বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সুকান্তবাবু বলেন, “এই রাজ্যে এসআইআরের ধারণা যখন নির্বাচন কমিশন দিয়েছিল, সেই সময় লাফালাফি শুরু হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে, এসআইআর আমরা করতে দেব না। তারপরে একের পর এক ঘটনা সামনে এসেছে। বসিরহাটের ঘটনাও আপনারা সবাই দেখেছেন, কি অবস্থা। লক্ষীর ভান্ডার দেওয়ার ব্যবস্থাও করে দিয়েছে বাংলাদেশী নাগরিকদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুমোর ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এখন তাই তিনি চাইছেন, এসআইআর স্থগিত করা হোক। স্থগিত হলে কি হবে? এই প্রক্রিয়া যদি আরও বাড়াতে চায়, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে ভোট করাতে করাতে। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনের বদলে রাজ্যপালের অধীনে যদি এই রাজ্যে ভোট হয়, তাহলে বিজেপির কোনো আপত্তি নেই।”