প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস খুব ভালো মতই উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, ২০২৬ এর নির্বাচনটা হবে অন্যরকম। এই নির্বাচনে সন্ত্রাস করে গায়ের জোরে জেতা সহজ হবে না। তাই কি এখন থেকেই তারা নিজেদের স্ট্র্যাটেজির পরিবর্তন করতে শুরু করেছে? এতদিন তারা যেই কায়দায় ভয় দেখিয়ে, নির্বাচনে বুথ দখল করে ভোট করতেন বলে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা, এবার কি সেই কায়দায় তারা পরিবর্তন আনতে চাইছে? রাজ্যের মন্ত্রী, তিনি যে মন্তব্য করলেন, তারপর প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি আবার ২০২১ এর পর যে ভোট পরবর্তী হিংসা দেখতে পাওয়া গিয়েছিল এই রাজ্যে, সেটা আবার শুরু হবে? আবার কি রাজ্যে নির্বাচনের বদলে দেখা যাবে রক্তের হোলিখেলা? যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কথায় কথায় বলেন, তিনি সব কাজ করে দিয়েছেন, বাংলা এগিয়ে গেছে। তার সরকারের আমলে তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না কেন? কেন মন্ত্রীর মুখ থেকে নির্বাচনের আগে যাতে তৃণমূলকেই সবাই ভোট দেয়, তার জন্য ভয় দেখানোর মত কথা, হুমকি, হুঁশিয়ারি ইত্যাদি শোনা যায়?
আগে জেনে নেওয়া যাক, রাজ্যের কোন মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন! আর ঠিক কি মন্তব্য করেছেন তিনি? এই রাজ্যের বুকে বেশ কিছু জেলা রয়েছে, যা ব্যাপক সন্ত্রস্ত বলেই দাবি করে বিরোধীরা। কিছুদিন আগেই কোচবিহারে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেখানে তার কনভয়ে পর্যন্ত হামলা ঘটনা ঘটেছে। যে ঘটনায় তিনি সরাসরি রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। আর সেই উদয়ন বাবুই এবার সরাসরি বিরোধী শূন্য করে দেওয়ার কথা বলে দিলেন। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে একটি অনুষ্ঠানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “কোচবিহারে ৯ টি আসনেই জিততে হবে। সব আসনে জিততে গেলে যা যা করার দরকার তাই করতে হবে।” আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যা যা করার দরকার বলে তিনি ঠিক কি কি করতে চাইছেন? নির্বাচনে মানুষ নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবে। তাতে কেউ জিতবে, কেউ হারবে। সেখানে কেউ যদি তাদেরকে ভোট দিতে না চায়, তাদেরকেও জোর করে, গায়ের জোরে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলেই ভোট করানো হবে, সেটাই কি বোঝাতে চাইলেন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী? ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
বিজেপির দাবি, কোচবিহার জেলায় গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরূপে হত্যা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উদয়ন গুহ মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই এই রাজ্যে অশান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের কথা বলার অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যেখানেই বিরোধী কণ্ঠস্বররা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করবে, সেখানেই তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার গাড়িতে পর্যন্ত হামলা হয়েছে। ২০২১ এ ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় রাজ্যের এই মন্ত্রীর নাম রয়েছে। তাই তার কাছ থেকে এই হুমকি, হুঁশিয়ারি শোনা যাবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এবার তৃণমূলের মন্ত্রীর এই সমস্ত ভয়ের কাছে সাধারণ মানুষ মাথানত করবে না। তৃণমূলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্য জুড়ে মানুষ গর্জে উঠেছে। আগামী নির্বাচনে যতই ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হোক এই কোচবিহার জেলা থেকে তৃণমূল শূন্য হাতে ফিরে যাবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।