প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ভারতবর্ষে এমন কোনো রাজনৈতিক দল নেই, যাদের দলের ভেতরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নেই। তবে সেই কোন্দল সামাল দেওয়ার জন্য সঠিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। সব দল তো আর তৃণমূল কংগ্রেসের মত নয় যে, একজনই সবকিছু ঠিক করে নেয়, বাকি আর কারোর কোনো মতামত থাকে না দলে। খোঁচা দিয়ে তেমনটাই বলে বিরোধীরা। বিজেপি একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বিজেপি যখন ক্ষমতায় আসতে চাইছে, তখন তারাও খুব ভালো মত জানে যে, ২০২৬-এ এমন বেশ কিছু আসন আছে, যেখানে দলের পক্ষ থেকে যাকে প্রার্থী করা হবে, তাদের বিরুদ্ধে দলেরই একটা অংশ অসন্তোষ করবে। আর সেই বিষয়টি উপলব্ধি করেই প্রার্থী ঘোষণার পর যাতে সেরকম কিছু না হয়, তা নিশ্চিত করতে দলীয় কর্মীদের কাছ থেকেই গ্যারান্টি নিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। এক্ষেত্রে প্রার্থী নিয়ে যদি কারোর কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে সব অভিযোগ শোনা হবে। কিন্তু তাকে জেতাতে যে সব রকম পরিশ্রম সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবেই করতে হবে, তা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিজেপি কর্মীদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়ে আরও দায়িত্ববান হওয়ার পরামর্শ দিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, ২০২১ এ বিজেপি আরও অনেক বেশি আসন পেতো। কিন্তু দলেরই কোন্দলের কারণে তারা বেশ কিছু আসনে খুব সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বিজেপির মত সর্বভারতীয় দল আরও একটু বেশি করে পশ্চিমবঙ্গের দিকে নজর দিলে এই সমস্ত আসন পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হতো। সব জায়গায় ভোট কারচুপি, সব জায়গায় হিংসা, সব জায়গায় বুথ দখলকে হয়ত বাইরে দায়ী করছে বিজেপি। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে তাদের একটা অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে এবং সেই কোন্দলের কারণেই যে অনেক আসনে তাদের অল্প ভোটের কারণে পরাজিত হতে হয়েছে, তা রাজ্য নেতারাও খুব ভালো মতই উপলব্ধি করেছেন। তাই এবার সেই কোন্দলের কারণে যাতে সামান্য ভোটে কোনো আসন হাতছাড়া না হয়, দলের পক্ষ থেকে যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে যাতে লড়াইয়ের ময়দানে কেউ কোনোরূপ অসন্তোষ প্রকাশ না করেন, সেই বার্তা দিয়ে জয়ের পর সকলের সমস্ত অভাব অভিযোগ শোনা হবে বলে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
এদিন বিজেপির একটি দলীয় সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আর সেখানেই বিজেপি কর্মীদের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর যাতে কারও মধ্যে কোনো মনোমালিন্য না থাকে এবং কেউ যাতে প্রার্থী সম্পর্কে সেই সময়ে অভিযোগ না করেন এবং প্রকাশ্যে কিছু না বলেন, সেই প্রতিজ্ঞা করান রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। সুকান্তবাবু বলেন, “২৬ এর ভোটে প্রার্থী একটাই, নরেন্দ্র মোদী। আর প্রতীক পদ্মফুল। অন্য কিছু দেখা যাবে না। তারপরে যত অভাব, অভিযোগ, দাদা অমুকে ভালো না, আমার প্রার্থীর নাকটা বাঁকা, কানটা বাঁকা, সব শুনব। সমস্ত দুঃখ-কষ্ট দেখার দায়িত্ব আমাদের নেতৃত্বের থাকবে। কিন্তু যে প্রার্থী হবে, তাকে বিপুল ভোটে এই বিধানসভা থেকে জয়যুক্ত করতে হবে।” আর তারপরেই সকলকে মুষ্টিবদ্ধ হাত করতে বলে ভারতমাতার নামে স্লোগান দেওয়ান সুকান্ত মজুমদার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপি যদি নিজেদেরই কোন্দল মিটিয়ে উঠতে পারে, তাহলে অল্প আসনে যে সমস্ত জায়গায় তারা অতীতে হেরে গিয়েছিল, সেই সমস্ত জায়গা পুনরুদ্ধার করা তাদের অনেকটাই সুবিধা হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধানসভাগত ভাবে এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর ক্ষেত্রে যদি এইরকম বার্তা কর্মীরা পান, তাহলে তারা অভাব, অভিযোগকে দূরে সরিয়ে রেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় প্রার্থীকে জেতার জন্য আরও বেশি করে মনোনিবেশ করবেন। আর সেই দিকে কর্মীদের সেই মনের কথা শুনে জয় নিশ্চিত করতে সুকান্ত মজুমদারের মতই থিওরি প্রয়োগ করা উচিত বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।