প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল প্রায় সাড়ে ৮ বছর পর রাজ্য অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। যেখানে অনেকে পরীক্ষা দিলেও সকলের মধ্যেই একটা অনিশ্চয়তার বাতাবরণ লক্ষ্য করা গিয়েছে। সকলের মধ্যেই একটা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে যে, এবার নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে তো? কেননা যেভাবে এসএসসি ২০১৬ এর প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ার পর অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে তো একটা বিষয় স্পষ্ট যে, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে। ফলে এবার যারা যোগ্য, তাদের পরীক্ষা দেওয়ার কারণে তারা এমনিতেই হতাশ। নতুন করে তারা কেন আবার পরীক্ষায় বসবেন, এই প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে অনেক নতুন পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসলেও, তাদের মধ্যেও একটা চিন্তা তৈরি হয়েছে যে, সত্যিই কি এই পরীক্ষার কোনো ফলাফল হবে! নাকি আবার অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে পড়ে যাবেন তারা?
এদিকে গোটা রাজ্যজুড়ে যখন এই সমস্ত প্রশ্ন উঠছে, ঠিক তখনই যত জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন, তাদের মধ্যে যেমন অনিশ্চয়তা কাজ করছে, ঠিক তেমনই অনেকে এডমিট কার্ড পেলেও পরীক্ষা দিতে যাননি বলেই দাবি করে বসলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার বক্তব্য, পরীক্ষার নামে প্রহসন হয়েছে। আর অনেকেই জানেন যে, এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে নিয়োগের পরীক্ষা দিয়ে লাভের লাভ কিছুই হবে না। কেননা ইতিমধ্যেই দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই এই প্রহসনের পরীক্ষায় অনেকে অ্যাডমিট কার্ড পেলেও পরীক্ষায় বসেননি বলে দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আর শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য যদি সত্যি হয়, তাহলে এটা কিন্তু এসএসসি থেকে শুরু করে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের কাছে অত্যন্ত লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ঠিক কি বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী?
এদিন তমলুকের কর্মসূচি থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “প্রহসনের পরীক্ষা। ত্রুটিযুক্ত পরীক্ষা। বহু পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড নিলেও পরীক্ষা দিতে যাননি। কারণ মমতার কাছ থেকে তারা চাকরি আশা করেন না।” অনেকেই বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর এই কথা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মত কথা নয়। কারণ যারা পরীক্ষা দিয়েছেন, তারা পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর যে সমস্ত বক্তব্য রেখেছেন, তাতে তাদের বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট যে, তারা এই পরীক্ষা দিলেও খুব একটা সন্তুষ্ট নন। কারণ যারা এতদিন চাকরি করেছেন, তাদের আবার পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। ফলে তারা এমনিতেই হতাশার মধ্যে রয়েছেন। আর নতুন যারা পরীক্ষার্থী, তারা ভাবছেন যে, যারা যোগ্য, তাদের সঙ্গে তারা পরীক্ষা দিচ্ছেন। ফলে তুল্যমূল্য বিচার করে তারা কতটা সুযোগ পাবেন! সেটাও একটা প্রশ্নের বিষয়। ফলে একাধিক প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে। আর দিনের শেষে সব থেকে বড় প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে যে, এই রাজ্যে স্বচ্ছভাবে নিয়োগটা হবে তো? কারণ দুর্নীতি যে হয়েছে, সেটা তো এসএসসি নিজেরাই প্রমাণ করে দিয়েছে। ফলে এবারের পরীক্ষা অনেকে দিতে গেলেও, অনেকে দুর্নীতির কথা ভেবে এবং অনিশ্চয়তার কারণে অ্যাডমিট কার্ড পেলেও সেই পরীক্ষা দিতে যাননি বলে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।