প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বারবার আদালতে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। শিক্ষা ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে রাজ্যের পর্দা যেভাবে ফাঁস হয়ে গিয়েছে, যেভাবে আদালতে একের পর এক তথ্য উন্মোচন হয়েছে, তাতে যথেষ্ট চাপে রয়েছে নবান্ন। আর এবার সেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে আদালতে যে বিস্ফোরক দাবি করলো সিবিআই, তাতে ২৬ এর আগে রীতিমত ঘুম উড়তে চলেছে রাজ্য প্রশাসনের বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেখানে আদালতে এই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হওয়া এবং সেখানেও নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হয়েছিল বলেই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

বলা বাহুল্য, এসএসসির শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে গতমাসেই সিবিআইকে বড় প্রশ্ন করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান তিনি। আর সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন আদালতে বড় তথ্য পেশ করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, অতিরিক্ত শূন্য পদ নিয়োগেও টাকার লেনদেন হয়েছিল। এক্ষেত্রে বিচারপতি প্রশ্ন করেন যে, কতজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল? আর তার জবাবেই সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই তথ্য সম্পূর্ণরূপে সামনে আনতে গেলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। আর তারপরেই সিবিআইকে এফআইআর করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি। আর অন্যান্য ক্ষেত্রের মত অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে এমনিতেই বিতর্ক রয়েছে। আর তার মধ্যে সেই অতিরিক্ত শূন্য পদেও নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকার লেনদেন হয়েছে বলে আদালতে সিবিআই যে দাবি করলো, তাতে চিন্তার মুখে পড়ে গেল নবান্ন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে শাসককে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, এই রাজ্যে সমস্ত ক্ষেত্রেই দুর্নীতিতে ভরা। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার। বারবার করে অনিয়ম সামনে আসছে। এবার অতিরিক্ত শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকার লেনদেন হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। তাই অবিলম্বে যারা টাকা নিয়েছেন, যারা বেকার যুবকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, তাদের শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন বলেই দাবি বিরোধীদের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এমনিতেই শিক্ষায় নিয়োগ যে দুর্নীতি সামনে এসেছে, তাতে জেরবার তৃণমূল সরকার। আর তার মধ্যে অতিরিক্ত শূন্য পদ নিয়োগ নিয়ে এমনিতেই বিরোধীরা তৃণমূলকে মাঝেমধ্যেই কটাক্ষ করে। তবে এবার সেই নিয়োগের ক্ষেত্রেও যেভাবে টাকার লেনদেন হয়েছে বলে আদালতে বিস্ফোরক দাবি করে বসলো সিবিআই, তাতে কিন্তু শাসকের জন্য ২০২৬ এর আগে বড়সড় দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। বিচারপতির নির্দেশে এফআইআর দায়েরের অনুমতি পেয়ে গেল সিবিআই। এখন যদি তারা খোলা হাতে ঝোড়ো ব্যাটিং করতে শুরু করে, নিজেদের মতো করে আদালতের অনুমতি পেয়ে তদন্ত করতে শুরু করে এবং কেঁচো খুঁড়তে যদি কেউটে বেরিয়ে যায়, তাহলে ২৬ এর আগে বিরাট ধাক্কার মুখে পড়তে পারে নবান্ন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।