প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
অবশেষে আজ তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে হুমায়ুন কবীরকে। অনেকেই মনে করছেন যে, যেভাবে হুমায়ুন কবীর দলের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন এবং যেভাবে তিনি বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের কথা জানিয়েছিলেন, তাতে অস্বস্তিতে পড়েই তৃণমূল তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এত কিছুর পরেও সেই বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের অবস্থান থেকে সরে আসেননি হুমায়ুনবাবু। আর এতদিন ধরে হুমায়ুন কবীর দলের বিরুদ্ধে অনেক কথা বললেও, কেন তিনি দল থেকে বের হয়ে এই সমস্ত কিছু বলছেন না? কেন তিনি নিজের স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করছেন না? সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর আজ যখন সেই হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলো তৃণমূল কংগ্রেস, তখন প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে যে বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের কথা হুমায়ুন কবীর বলছেন এবং যার জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে সাসপেন্ড করা হলো, এর পেছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেই তো? সেই প্রশ্ন তুলে দিয়ে রীতিমত বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

আজ তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করার পর রাজনৈতিক মহল থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া এসেছে। অনেকেই বলেছেন, এটা তৃণমূলের গটআপ গেম ছাড়া আর কিছু নয়। তৃণমূল এখন হিন্দুদের ভোট পাওয়ার জন্য তলায় তলায় বাবরি মসজিদ যাতে হুমায়ুন কবীর করেন, তাকে সমর্থন করছে। আবার তাকে সাসপেন্ড করে দেখানোর চেষ্টা করছে যে, তারা এই ধরনের নীতিকে সমর্থন করে না। আসলে ভোট মিটে গেলেই আবার হুমায়ুন কবীরকে দলে নিয়ে নেওয়া হবে। এটা তৃণমূলের বোঝাপড়ার রাজনীতি বলেই খোঁচা দিচ্ছেন একাংশ। আর এসবের মধ্যেই হুমায়ুন কবিরকে সাসপেন্ড প্রসঙ্গে বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের যে কথা ভরতপুরের বিধায়ক বলছেন, তার পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন নেই তো? সেই প্রশ্ন তুলে দিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

এদিন নন্দীগ্রামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই হুমায়ুন কবীরের সাসপেন্ড প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, “হুমায়ুন কোভিদ লোকসভা নির্বাচনের সময় বলেছিলেন যে, আমরা ৭০, ওরা ৩০। অর্থাৎ হিন্দুরা ৩০, আর মুসলিমরা ৭০। চাইলে ভাগীরথীর জলে ভাসিয়ে দেব। তারপর হুমায়ুন কবীর বললেন যে, এটা আমার কথা ছিলো না, মমতা ব্যানার্জির কথা ছিলো। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে বাবরি মসজিদ গড়ার জন্য সমর্থন দিয়েছেন কিনা, অনুমোদন দিয়েছেন কিনা, পেছনে আছেন কিনা, সেটাও তো আগে জানা দরকার হুমায়ুন কবীরের কাছ থেকে। আর হুমায়ুন কবীর বলেছেন যে, উগ্র মৌলবাদী রাজনীতি করেছেন তিনি, ইউসুফ পাঠানকে জেতানোর জন্য, আর অধীর চৌধুরী এবং বিজেপিকে হারানোর জন্য। আর তিনি এটাও বলেছেন যে, এটা আমি করিনি, আমাকে দিয়ে করানো হয়েছে। তাই এই বিষয়টা আগে পরিষ্কার করা দরকার।” অর্থাৎ হুমায়ুন কবীরকে বাইরে সাসপেন্ড করার কাজ তৃণমূল করে এখন দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলে যে হবে না। এর পেছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন কিনা, তার অনুমোদন রয়েছে কিনা, তাও যে হুমায়ুন বাবুকে জানাতে হবে, সেই কথা বলে শাসকের চাপ বাড়িয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।