প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের তৃণমূল নেতারা আইন, আদালত কিছুই যে মানেন না, তারা যে মনে করেন তাদের দলই একমাত্র আইন, তাদের নেত্রীই একমাত্র আদালত। তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট হয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে স্বয়ং বিচারপতি সম্পর্কে যে মন্তব্য করতে এদের দুবার ভাবার প্রয়োজন নেই, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। অন্তত তেমনটাই দাবি করছেন বিরোধীরা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাকে যে রক্ষাকবচ আদালতের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েই বর্তমানে গাত্রদাহ শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। কোনোভাবেই শুভেন্দু অধিকারীকে কাবু করা যাচ্ছে না বুঝেই কি এবার সরাসরি বিচারপতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে পড়লো এই রাজ্যের শাসক দল? প্রকাশ্যে যেভাবে বিচারপতি রাজশেখর মান্থাকে আক্রমণ করে বসলেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ, তাতে প্রশ্ন উঠছে তার ভূমিকা নিয়ে। বিরোধীদের প্রশ্ন, কেন এবার কুনালবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
প্রসঙ্গত, নবান্ন অভিযানের দিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিকভাবেই তার বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে শাসক দলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে যে, একজন বিরোধী দলনেতা এইভাবে কি কোনো মুখ্যমন্ত্রীকে রুচিহীন ভাষায় আক্রমণ করতে পারেন? তবে এটা নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তুলতেই পারে। কিন্তু সেই প্রশ্ন তুলতে গিয়ে কুনাল ঘোষ যে কথা বলে দিলেন, তার ফলে কুনালবাবু তো বটেই, তার দলের রুচিবোধ নিয়েও এই প্রশ্ন উঠছে যে, এইভাবে কি বিচারপতিকে আক্রমণ করা যায়? ঠিক কি বলেছেন কুনাল ঘোষ? কুনাল বাবুর বড্ড রাগ হয়েছে, কেন রাজশেখর মান্থা রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছেন? তাই এবার বিচারপতিকে এর দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
এদিন কুনাল ঘোষ বলেন, “জাস্টিস মান্থা, আপনি আপনার রেসপন্সিবিলিটি অস্বীকার করতে পারেন না। মান্থার বলে বলিয়ান হয়ে মহিষাসুর রুপি না কি রুপি, আমি জানি না, শুভেন্দু অধিকারী কুৎসিততম কথাবার্তা বলেছেন। এই কথা বলা যায় না। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। জাস্টিস মান্থা ব্রহ্মার মত এরকম ভুলভাল বর দিয়ে বসে আছেন। কাজেই দায় তো তাকেও নিতে হবে।”
আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে লড়াই করছেন, তাতে ছটফটানি শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে। হ্যাঁ, এটা ঠিক, শুভেন্দু অধিকারীর কিছু শব্দ চয়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে। তবে তার দলের কর্মীরা দিনের পর দিন মার খাচ্ছে, তার ওপর বিনা দোষে অত্যাচার হচ্ছে, আর তিনি সবকিছু মুখ বুজে কত দিন সহ্য করবেন! এটাও কিন্তু ভেবে দেখার মত বিষয়। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর কোনো বক্তব্য নিয়ে যদি তাদের কোনো আপত্তি থাকে, তাহলে তারা রাজনৈতিকভাবে তাকে খন্ডন করুক। কিন্তু তা না করে যেভাবে সরাসরি বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ, তাতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কবে হবে, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল।