প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা তো অনেক দূরের কথা, সামান্য বিরোধী দলনেতার যে নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই, তা তো আজকের ঘটনার পর দিনের আলোর মত আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে গেল। এখানে যারাই শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, পুলিশের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে যারাই সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলবেন, তাদেরকেই পড়তে হবে প্রাণ সংশয়ের মুখে। এত নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকা সত্ত্বেও, আদালতের অনুমতি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এদিন কোচবিহারে গেলেও, তার কনভয়ে হামলা হয়। আর সেই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুবাবু সরাসরি মন্ত্রী উদয়ন গুহর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। পুলিশ প্রশাসন কিভাবে কাজ করছে, তা আরও একবার জনসমক্ষে এনে দেন তিনি। বুঝিয়ে দেন যে, এই রাজ্যের পুলিশ কতটা অপদার্থ বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তা দিতে। তবে অবশেষে এই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ।

বস্তুত, এদিন কোচবিহারের খাগড়াবাড়িতে শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলা হয় তার গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনাতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এমনকি গোটা ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলেও দাবি করেন তিনি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল যে, যেখানে আদালতের অনুমতি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এখানে এসেছেন, সেখানে তার কনভয়ে এইভাবে হামলা হচ্ছে, অথচ পুলিশের কোনো অ্যাকশন নেই? অনেকে বলছেন, এই সমস্ত প্রশ্ন তুলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ভবিষ্যতে আরও বড় কোনো অ্যাকশন নিতে পারেন, আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন, সেই ভয়েই হয়ত এখন যারা এই হামলা করিয়েছে, তাদেরকে না ধরে কোনো এক চুনোপুঁটিকে ধরে মুখ রক্ষা করার মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিচ্ছে পুলিশ। অন্তত তেমনটাই দাবি বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের।

জানা গিয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির নাম রঞ্জিত দে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই কি এই কনভয়ে হামলা করেছে? পরোক্ষে থেকে কারা এই নির্দেশ দিয়েছে, তাদেরকে তো খুঁজে বের করার ক্ষমতা এই অপদার্থ প্রশাসনের নেই। কিন্তু যারা সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিলো, তাদের প্রত্যেককে কেন গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ? সেই প্রশ্ন তুলে সোচ্চার হচ্ছে বিরোধীরা।

গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, গোটা ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাতেও তার নাম জড়িয়ে রয়েছে। আজকে আদালতের অনুমতি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কোচবিহার জেলায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও যেভাবে তার কনভয়ে হামলা হলো, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই রাজ্যে গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই। আসলে এই রাজ্যের পুলিশ জানে যে, আজকে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী আরও বড় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন। আর তিনি যদি বড় পদক্ষেপ নেন, তাহলে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে যে, পুলিশ কেন শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারেনি এবং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের গ্রেফতার করেনি! তাই নিজেদের মুখ রক্ষার জন্যই কোনো এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করছে অপদার্থ প্রশাসন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।