প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে শুভেন্দু অধিকারীকে অত্যন্ত ভয় পান এবং সেই কারণে যে তিনি রাজনৈতিকভাবে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে পেরে ওঠেন না, তা নিয়ে দ্বিমত নেই বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের মধ্যে। শুভেন্দুবাবু দল পরিবর্তন করার পর এবং বিজেপির বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে কাবু করে দিচ্ছেন, তাতে রীতিমত তিতিবিরক্ত তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই পরিস্থিতিতে আজ রাজ্য বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখার সময় নাম না করে ফের আরও একবার আক্রমণ করে বসলেন সেই শুভেন্দু অধিকারীকে। একাংশ বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী যাতে অধিবেশনে না থাকে, তার জন্য আগেভাগেই তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। কিন্তু সেই শুভেন্দু অধিকারীর ভয় রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। সেই কারণে তিনি শুভেন্দু অধিকারী অধিবেশনে না থাকার পরেও তাকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না। আর এতেই বোঝা যাচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুবাবুকে দেখে রাজনৈতিক ভাবে কতটা ভয় পান! অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিজেপি।

কি ঘটনা ঘটেছে? এদিন প্রথম থেকেই উত্তাল ছিল রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময় থেকেই স্লোগান বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে শুরু করে। তারপর মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময় নাম না করে আক্রমণ করে বসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনবার দল পরিবর্তন করেছেন বলে কটাক্ষ করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আর একজন যিনি বড় নেতা হয়েছেন এখানকার, তিনি তিনটা রাজনৈতিক দলে গিয়েছিলেন। তিনবার দল পরিবর্তন করেছেন। একবার কংগ্রেস, একবার সমাজবাদী না কি, একবার তৃণমূল, আর একবার বিজেপি। চারটি দল বদলে আমাদের জ্ঞান দিতে এসো না। চারটি পার্টি বদল করেছে। বদলুদের দল।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীকে অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড না করে দিয়ে তাকে যদি অধিবেশনে রাখতেন, তাহলে সেই সময়ই উপযুক্ত জবাব পেয়ে যেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি খুব ভালো মতই জানেন যে, শুভেন্দু অধিকারী থাকলে তিনি কথা বলতে পারবেন না। আর সেই কারণেই শুভেন্দু অধিকারীকে অধিবেশনের বাইরে রেখে তাকে আক্রমণ করে মনের সাধ মিটিয়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী বলেই কটাক্ষ একাংশের। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণের মধ্যে দিয়ে আরও একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল যে, শুভেন্দুবাবু বঙ্গ রাজনীতিতে কতটা প্রাসঙ্গিক। তিনি কতটা তৃণমূলের কাঁপুনি ধরিয়ে দিতে পেরেছেন! যার কারণে তিনি অধিবেশনে না থেকেও যেমন প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকলেন, ঠিক তেমনই তার রাজনৈতিক কৌশলে যে রীতিমত থরথর করে কাঁপছে শাসক দল, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আক্রমণাত্মক মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।