প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে তৃণমূল সরকারে আসার পর কোনটা সরকারি মঞ্চ, আর কোনটা দলীয় মঞ্চ, তার মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না। সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানোই হয় না। উল্টে তৃণমূলের দলীয় পদাধিকারীদের বিশিষ্ট সমাজসেবী বলে সম্বোধন করে অনেক সরকারি মঞ্চে তাদের চেয়ার দখল করে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। এমনকি অনেক জায়গায় সরকারি মঞ্চ থেকেও রাজনৈতিক আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের। অবশ্য যে দলের নেত্রী নিজেই সরকারি মঞ্চের সদ্ব্যবহার করতে জানেন না, যিনি নিজে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই বলেন। তার দলের নেতারা যে তাকেই অনুকরণ করে সেই সরকারি কর্মসূচি থেকে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করবেন, এটাই কাঙ্ক্ষিত তাই বিরোধীরা অনেক সময় বলেন, এক ঝাড়ে তো আলাদা বাঁশ হয় না। আর সামনেই যখন ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন, তৃণমূল যখন আতঙ্কিত এসআইআর নিয়ে, তখন তাদের নেতাদের মাথা আর ঠিক নেই। কোনটা সরকারি মঞ্চ, কোনটা দলীয় মঞ্চ এবং কোনখান থেকে কি বলতে হবে, তা তারা ভেবে পাচ্ছেন না। তাদের একটাই টার্গেট, বিজেপিকে আক্রমণ করতে হবে। আর তাই “আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান” যেটা সরকারের একটা বড় কর্মসূচি, সেই কর্মসূচি থেকে বিজেপি বিধায়ককে আক্রমণ করে বসলেন বনগাঁর চেয়ারম্যান।

এখন গোটা রাজ্যজুড়েই একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, তৃণমূল বলার চেষ্টা করছে, এসআইআরের বিরুদ্ধে। তাদের একটাই বক্তব্য যে, এসআইআর করে বিজেপি ঘুরপথে সিএএ এবং এনআরসিতে নাম তোলাতে চাইছে। আর এর ফলে তারা অনেক নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছে। অনেক ভোটারদের নাম এর ফলে বাদ যাবে। আর সেই রকমই কথা একেবারে “আমার পাড়া, আমার সমাধান” এর মঞ্চ থেকে উল্লেখ করে বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারকে কটাক্ষ করলেন বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, একটি পৌরসভার চেয়ারম্যান হয়ে তিনি কি করে এই কথা বলতে পারেন? তিনি যেমন একজন সরকারি প্রতিনিধি, ঠিক তেমনই তিনি তো সরকারি মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখছেন। নেত্রী যা পথ দেখিয়ে দেবে, সেই পথেই কথা বলতে হবে? নিজস্ব কোনো ভাবমূর্তি নেই? সরকারি মঞ্চকে ব্যবহার করে সবসময় বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের আক্রমণ করে এইভাবে কি রাজনীতি করা যায়?

এদিকে গোপাল শেঠের এই মন্তব্যের পরেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। তার বক্তব্য, যারা আইন জানে না, তাদের সঙ্গে কথা বলতে তার ভালো লাগে না। ২০২৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে যারা ওপার থেকে শরণার্থী হিসেবে ধর্মীয় অত্যাচারে এপারে এসেছেন, তারা সকলেই নাগরিকত্ব পাবেন। এটাই নিয়ম। কিন্তু সেটাকে অন্যভাবে বলে ভিত্তিহীন কথা বলার চেষ্টা করছেন গোপাল শেঠ। তবে রাজনীতিতে আক্রমণ, প্রতিআক্রমণ থাকবে। কিন্তু তার জন্য সরকারি মঞ্চ কেন বেছে নিতে হবে? কেন সরকারি মঞ্চ থেকে বারবার করে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের টার্গেট করা হবে? এমনিতেই তো তাদের সরকারের কোনো কর্মসূচিতে ডাকা হয় না। তার মধ্যে তাদের অনুপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে বলার জন্য সেই সরকারি মঞ্চ বেছে নিচ্ছেন কেন তৃণমূল নেতারা? সরকার তাদের হাতে আছে বলে তারা যা খুশি তাই করতে পারেন, এটাই কি রাজ্যের আইন? প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।