প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২১ জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ভাষার প্রতি বিজেপির যে আক্রমণ, তার বিরুদ্ধে দলকে রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মত গান্ধী মূর্তির পাশে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রত্যেক সপ্তাহের শনি এবং রবিবার বিভিন্ন শাখা সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল। তবে আজ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তৃণমূলের সেই ধর্না মঞ্চ খুলে ফেলা হয়। যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের পরে অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল সেই মঞ্চ লাগিয়েছিল, আর সেই কারণেই তা খুলে ফেলা হয়েছে বলে জানানো হয়। আর এই পরিস্থিতিতে সেই খবর পেয়েই মেয়ো রোডে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে সেনার জায়গার বদলে রানী রাসমণি রোডে এই কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি যেভাবে আজ ভাষা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতিবাদের পথকে আটকে দেওয়া হলো, তার বিরুদ্ধে আগামীকাল রাজ্য জুড়ে বড় কর্মসূচি পালনের ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, কিছুক্ষণ আগেই মেয়ো রোডে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে বিজেপির কথায় আর্মিকে চলতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি যেভাবে বাংলা ভাষার প্রতি আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল এতদিন প্রতিবাদ করছিল এবং যেভাবে আজ তাদের মঞ্চ খুলে ফেলা হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল রাজ্য জুড়ে আরও বড় কর্মসূচি হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে আগামীকাল দুপুর ২ টো থেকে বেলা ৪ টার মধ্যে রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলায় জেলায়, ব্লকে ব্লকে প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করার নির্দেশ দেন তিনি। অর্থাৎ এদিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যে মঞ্চ খুলে ফেলা হয়েছে, তাকে হাতিয়ার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দলকে আবারও রাস্তায় নামাতে চাইছেন এবং বাংলা ভাষার প্রতি আক্রমণের বিষয়টিকে হাতিয়ার করে আন্দোলনকে জোরালো করতে চাইছেন, তা তার বার্তার মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধর্না মঞ্চ খুলে ফেলার কারণে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন। তিনি কল্পনাই করতে পারেননি যে, তার দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে এভাবে বাধাদান হবে। তাই সেনাবাহিনী মঞ্চ খুলে নেওয়ার পরেই তিনি রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। তবে তার কাছে যদি সুযোগ থাকত, তাহলে তিনি হয়তো এখানেই মঞ্চ বেঁধে দলকে কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দিতেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, এখানে মঞ্চ বেঁধে কর্মসূচি পালন করা যাবে না। তাই প্রতিবাদকে এক অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে কৌশলী হয়ে এই মঞ্চ যেভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে, যেভাবে সেনাবাহিনী তা খুলে নিয়েছে, সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে তার বিরুদ্ধে আরও বেশি করে দলকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার জন্য আগামীকাল রাজ্য জুড়ে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তৃণমূল নেত্রীর ডাক দেওয়া এই আন্দোলনকে কি করে সামাল দেয় বিজেপি, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।