প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তৃণমূল কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এটা একটা লিমিটেড কোম্পানি। বারবার এই কথা বলে খোঁচা দিতে দেখা যায় বিরোধী নেতাদের। আর তৃণমূল দলের মধ্যে যে বিন্দুমাত্র শৃঙ্খলা নেই, তাদের দলের এক নেতার সঙ্গে যে অপর নেতার মুখ দেখাদেখি নেই, তা মোটামুটি সকলেই জানেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত তৃণমূলের দুর্দিনের সঙ্গী মাঝেমধ্যেই দলের অনেকের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যই মন্তব্য করে ফেলেন। যার ফলে দলনেত্রীকেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আর সামনেই যখন বিধানসভা নির্বাচন, যখন আজ ঘটা করে তৃণমূল বৃহৎ আকারে সংহতি দিবসের আয়োজন করেছে, ঠিক সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত স্নেহের, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কলকাতা পৌরসভার মহা নাগরিক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম সম্পর্কে তার সামনেই যে কথা বলে দিলেন কল্যানবাবু, তাতে সকলের মধ্যে একটাই প্রশ্ন যে, ববি হাকিম কি এই অপমান মেনে নিতে পারবেন?
আজ ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সংহতি দিবসের আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যান্যবারের থেকে এবার এসআইআর আবহে আরও বেশি করে এর পরিধি বাড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দল। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনের কথা তুলে ধরেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা কলকাতায় সেই সময় ঘুরে বেড়িয়েছেন, সেই প্রসঙ্গ গল্পের আকারে বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেন তিনি। আর তখন মঞ্চে বসে কিছু একটা বলছিলেন ববি হাকিম। আর তখনই তার উদ্দেশ্যে কল্যাণবাবু বলেন, “তুই তখন ছিলি না। ববি তখন ছিল না। ও যাই বলুক না কেন, ও তখন ছিল না।”
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৬ ডিসেম্বর ১৯৯২, যখন বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা হলো, তারপর কলকাতা শহরে সন্ধ্যার পর কারফিউ জারি হয়েছিল। আর দিদি তখন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত্রি ১১ টা, ১২টা পর্যন্ত কসবা থেকে শুরু করে মেটিয়াবুরুজ, পার্ক সার্কাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। আর আমি সেই সময়, যখনই কোনো কঠিন সময় আসত বা নির্বাচনের সময় আসতো, দিদি আমাকে ডাকতেন, অফিসে বসার জন্য। যে অফিসটাকে এখন দেখছেন, প্রচুর লোক আছে, প্রচুর জিনিস আছে। আমাদের সময় এত কিছু ছিল না। আমি থাকতাম, মানিকদা থাকতো। আর একটা টেলিফোন ভরসা।” আর তখনই যখন ববি হাকিম কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিলেন, সেই সময় প্রকাশ্য মঞ্চেই মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়েই কল্যাণবাবু ববি হাকিমের উদ্দেশ্যে বলেন, “তুই ছিলি না। তুই সেই সময় আসিসনি। তুই সেই সময় আসিসনি। ববি ছিল না। ও যাই বলুক না কেন, ববি ছিল না সেই সময়। অরুপ ছিলো।” আর কল্যাণবাবুর এই মন্তব্যে ববি হাকিম প্রকাশ্যেই যে অনেকটা খাটো হয়ে গেলেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এখন তৃণমূলের অন্দরমহলে এর প্রভাব কতটা পড়ে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।