প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরি চলে যাওয়ার পরেই অত্যন্ত চাপে রয়েছে এই রাজ্যের সরকার। নতুন করে তারা এসএসসি পরীক্ষার জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঠিকই। তবে বিরোধীদের প্রশ্ন, আবার নতুন করে চিহ্নিত অযোগ্যদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে পরীক্ষায় কোনোভাবেই এই চিহ্নিত অযোগ্যদের সুযোগ দেওয়া হবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যার ফলে এমনিতেই চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্য। আর তার মধ্যেই আজ নবান্ন অভিযান করতে চলেছেন চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা নবান্ন অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। তবে তাদের আটকাতে নবান্নের সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যাতে আন্দোলন কারীরা কোনোভাবেই নবান্নে আশেপাশে পৌঁছতে না পারেন, তার জন্য সবরকম চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের এই অতি সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিভিন্ন মহলে। সকলের একটাই প্রশ্ন যে, সরকারের যখন কোনো দায় নেই, সরকার যখন কোনো দোষ করেনি, তখন সরকারের সঙ্গে কথা বলতেই নবান্ন অভিযান করছেন চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা, তখন তাদের সঙ্গে কথা না বলে নবান্ন অভিযানের আগেই তাদের আটকে দিতে পুলিশের এই সক্রিয়তা কেন?
বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যে প্রতিবাদী মানুষদের আওয়াজ তোলার কোনো অধিকার নেই। সম্পূর্ণরূপে গণতন্ত্র লঙ্ঘিত হয়েছে। রাজ্যের দুর্নীতির কারণেই আজকে এত ছেলে মেয়ের চাকরি চলে গিয়েছে। আর তারা যখন সুবিচার চাইতে নবান্নে যাচ্ছে, তখন তাদের আগেভাগেই আটকে দিয়ে আন্দোলনের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে এই রাজ্যের প্রশাসন। আসলে এই সরকারকে নবান্ন থেকে না সরালে রাজ্যের কেউ সুবিচার পাবে না। রাজ্যের বেকার শিক্ষিত সমাজ যদি নিজেদের স্থায়ীকরণের নিশ্চয়তা চান, তাহলে ২০২৬-এ সরকারের পরিবর্তন করতে হবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের আজকের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগেও বিভিন্ন সময় নবান্ন অভিযানের আওয়াজ উঠেছে। কিন্তু অনেকেই তা করে দেখাতে পারেননি। তবে এবার সেই চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা যে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন এবং তার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তার ফলে রীতিমত থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছেন নবান্ন। কেননা যারা তাদের চাকরি হারিয়েছেন, তাদের আর কোনো পিছুটান নেই। তারা এখন সরকারের মুখোমুখি হয়ে প্রতিবাদ জানাতে চান। তাই তাদেরকে পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে, রাস্তায় আটকে দিয়ে, ব্যারিকেড দিয়ে, জলকামান চালিয়ে যদি কণ্ঠরোধ করা হয়, তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, সরকার এবং নবান্ন এই চাকরি হারাদের অভিযানে কতটা ভয় পাচ্ছে! দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা.