প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বিরোধী দলের কর্মীরা তো বটেই, স্বয়ং বিরোধী দলনেতারও যে নিরাপত্তা বলে কিছু নেই, তা আজ দিনের আলোর মত স্পষ্ট হয়ে গেল। যেখানে কোচবিহারে যাওয়ার পথে শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর তারপরই রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহর নেতৃত্বেই এই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা। তবে নিজেদের নেতার গাড়িতে হামলা হবে, আর বিজেপি মুখ বুজে সবকিছু সহ্য করবে, এমনটা তো হতে পারে না। তাই ২৬ এর নির্বাচনের আগে যখন রাজ্যে বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই, পুলিশ যখন মেরুদণ্ডহীনের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের, ঠিক তখনই বিরোধী দলনেতার কনভয়ে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গেল প্রতিবাদ কর্মসূচি। যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর নিজের খাসতালুক নন্দীগ্রামে রীতিমত টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলো বিজেপি।

বস্তুত, এদিন আদালতের নির্দেশ মত শুভেন্দু অধিকারী কোচবিহারে যান। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তার কনভয়ে হামলা করা হয়। এমনকি তাঁর গাড়ির কাঁচ পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়। অল্পের জন্য রক্ষা পান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। স্বাভাবিকভাবেই যেখানে বিরোধী নেতার সুরক্ষা বলতে কিছু নেই, সেখানে কি করে রাজ্য গণতন্ত্র অটুট থাকবে! কি করে রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে! এই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে। আর তার মধ্যেই এবার শুভেন্দুবাবুর কনভয় হামলার ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠলো নন্দীগ্রাম।

এদিন নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতা কর্মীরা পথে নামেন। যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে উঠতে শুরু করে স্লোগান। এমনকি টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তার মাঝপথেই আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানান বিজেপি কর্মীরা। এখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির এই প্রতিবাদ নিয়ে বিভিন্ন কথা বলা হতেই পারে। বলা হতেই পারে যে, বিজেপি আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। কিন্তু যে রাজ্যে পুলিশ প্রশাসন আইনের সুরক্ষার ঠিকা নিয়ে রেখেছে, অথচ রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে সুরক্ষা দিতে পারে না, সেখানে বিরোধী দল নিজেদের নেতার কনভয় হামলার ঘটনার পরেও কি করে চুপ করে বসে থাকতে পারে? তাও তো বিজেপি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছে। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যখন তৃণমূল কংগ্রেস কোনো আন্দোলন করতে যায়, তখন তারা যে অসভ্যতা করে, তা অন্তত বিজেপি করেনি। তারা গণতান্ত্রিক উপায়ে এই রাজ্যের পুলিশের অসভ্যতা এবং তৃণমূলের গুন্ডাগিরির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ কায়দায় আন্দোলন করে শাসকদলকে এই বার্তা দিতে চেয়েছে যে, এভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হলে মুখ বুজে সহ্য করবে না বিজেপি কর্মীরা বলেই দাবি একাংশের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার আগে যত বিরোধী নেতাদের ওপর আক্রমণ হবে এবং শুভেন্দু অধিকারীর ওপর এইভাবে আক্রমণ করবে তৃণমূল কংগ্রেস, ততই তারা চাপে পড়বে। এর ফলে প্রমাণ হয়ে যাবে যে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। পাশাপাশি এটাও প্রমাণ হয়ে যাবে যে, বিরোধী দল বিজেপি এবং দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ঠিক কতটা ভয় পান এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! সেই কারণে নিজের ক্যাডারদের দিয়ে শুভেন্দুবাবুকে যেভাবেই হোক, প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা চলছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলেই অভিযোগ। যার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রশ্রয় দিচ্ছে এই রাজ্যের পুলিশ বলেই দাবি বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের। তবে নিজেদের ভালো সকলেই বোঝে। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে যতটা সময় আছে, ততটা সময় অন্তত নিজেদের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য তৃণমূল যদি এই অসভ্য রাজনীতি থেকে সরে আসে, তাহলে তাদের জন্যই সুখকর বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।