প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিহারের মতই পশ্চিমবঙ্গেও ভোটার তালিকায় সংশোধনী প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। যদিও বা ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি সাধারণ মানুষের নাম বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বাংলা দখল করার চেষ্টা করছে বলে পাল্টা দাবি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেসবের মধ্যেই এবার আগেকার দিনে অনেক মানুষদেরই জন্ম বাড়িতে হতো। সেভাবে হাসপাতাল ছিল না। তাই জন্মের শংসাপত্র তারা কিভাবে পাবেন, আর কিভাবেই বা তার প্রমাণ দেবেন, তা নিয়েই প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে সোচ্চার হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি আরও একধাপ এগিয়ে যদি তিনি ভুল বলে থাকেন, তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করুন বলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তিনি।
এদিন ঝাড়গ্রামে একটি সভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই ২০০২ সালের আগে যাদের জন্ম তাদের মা, বাবার জন্মের সার্টিফিকেট দেখাতে বলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে সেই সার্টিফিকেট তারা কিভাবে পাবেন, তা নিয়ে সরাসরি কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজের মা এবং বাবার জন্মের শংসাপত্র দেখাতে পারবেন তো! সেই প্রশ্নও তুলতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন ঠিক কি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
প্রকাশ্য সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমিও গ্রামের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছি। আমরা সব হোম ডেলিভারি। কোথা থেকে সার্টিফিকেট আসবে! আকাশ থেকে? স্কুলেরটাই চালাই। আজকে আপনারা কি বলছেন! ২০০২ সালের আগে, আমি বোঝাবার জন্য অভিষেকের কথা বলছি। অভিষেক জন্মেছে, ১৯৮৭ সালে। ওর বয়স এখন ৩৭ বছর। তার মানে, মনে রাখবেন, ওকে বলছে, তোমার মা-বাবার বার্থ সার্টিফিকেট দাও। তাহলে যাদের ৪১-৪২ বছর বয়স, তারা তাদের মা বাবার বার্থ সার্টিফিকেট পাবে কোথা থেকে? যারা বলছে, তাদের বার্থ সার্টিফিকেট আছে তো? ও হোম মিনিস্টার অমিত শাহ, আমাকে গ্রেপ্তার করো। যদি আমি মিথ্যে কথা বলি। তোমার বার্থ সার্টিফিকেট কোথায়?”
আর মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজনৈতিক আক্রমণের মধ্যে দিয়ে সরাসরি অমিত শাহর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বললেন যে, “আমাকে গ্রেপ্তার করো, যদি আমি মিথ্যে কথা বলি” তখন সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে পাল্টা খোঁচা দিচ্ছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা করছেন যে, তিনি গ্রেফতার হতে পারেন। সেই কারণেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নিজের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করে ফেলেছেন। আসলে যেভাবে এই রাজ্যে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে, যেভাবে নির্বাচন কমিশনকে মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন, তাতে পশ্চিমবঙ্গের সংবিধান পুরোপুরি বিপন্ন। আজ না হোক কাল, যারা দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত এবং যারা এই দুর্নীতিকে সমর্থন করেছেন, তাদের প্রত্যেককেই জেলে যেতে হবে। হয়ত সেই আশঙ্কাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে গ্রেপ্তারের বাণী শোনা যাচ্ছে বলেই কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরের।