প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বিরোধীরা যদি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে চায় এবং পুলিশ যদি সেখানে বাধা দেয় এবং তারপরেও যদি তারা প্রতিবাদ করে, তাহলে পুলিশ মিথ্যে মামলা দিতে দুবার ভাবে না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরোধীদের পক্ষ থেকে তেমনটাই অভিযোগ করা হয়। পুলিশি অতি সক্রিয়তা নিয়ে বারবার বিরোধী নেতারা আদালতে গিয়ে সোচ্চার হন। কিন্তু বিরোধীদের বেলায় এক আইন, আর শাসক দলের বেলায় আর এক আইন? এই প্রশ্নটা উঠছে, কারণ, মুর্শিদাবাদে আগামী ৬ তারিখ বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তবে সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আর সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই তৃণমূল বিধায়ক একেবারে এসডিপিওকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমনকি তার কলার ধরলে তাকে কেউ ছাড়াতে পারবে না বলেও মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ককে। কিন্তু পুলিশের চোখে চোখ রেখে যদি ন্যায্য প্রতিবাদ করে কোনো বিজেপি নেতা বা বিরোধী নেতাদের জেলে যেতে হয়, তাহলে একজন পুলিশ আধিকারিককে এত বড় হুমকি দেওয়ার পরেও কি করে বাইরে রয়েছেন তৃণমূল বিধায় হুমায়ুন কবীর? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

ইতিমধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দলের বিরুদ্ধে অনেক কথা বললেও এখনও দল ছাড়ার মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দেখা যায়নি তাকে। তিনি কি করবেন, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। আর এর মাঝেই আগামী ৬ তারিখ মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন বলে জানিয়েছেন এই তৃণমূল বিধায়ক। যাকে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। কিন্তু এসবকে দূরে সরিয়ে রেখে আজ সেই তৃণমূল বিধায়ক যেভাবে এক পুলিশকর্তাকে উদ্দেশ্য করে হুঁশিয়ারি দিলেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, এখনও কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না? স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে পুলিশ মন্ত্রী, সেখানে পুলিশের একজন আধিকারিকের উদ্দেশ্যে এই ধরনের হুমকি দেওয়া মানে তো স্বয়ং পুলিশ মন্ত্রীকে অসম্মান করা। তাহলে এরপরেও শুধুমাত্র দলীয় বিধায়ক বলেই কি হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী?

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আর সেখানেই বাবরি মসজিদের শিলান্যাস নিয়ে যেভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে সোচ্চার হন তিনি। হুমায়ুনবাবু বলেন, “আপনাদের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে পরিষ্কারভাবে সতর্ক করছি, আগুন নিয়ে খেলবেন না। আর এসডিপিও উত্তম গড়াইকেও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, এটা মুর্শিদাবাদ জেলা। আপনি অনেক দাদাগিরি করে এসেছেন ভগবানগগোলায়। অনেক লাইফ নষ্ট করে দিয়ে এসেছেন। আমি আপনার সব ইতিহাস জানি। এটা বেলডাঙ্গা, এটা মুর্শিদাবাদ। হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে পাঙ্গা নিতে যাবেন না। আপনার মত এসডিপিওকে আমি কেয়ার করি না। যেদিন আপনার কলার ধরে নেব, সেদিন আপনার কলার ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার মত লোক থাকবে না।” আর এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, এত বড় সাহস কি করে হয় এই তৃণমূল বিধায়কের? বিরোধীরা তো সামান্য গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাদের মিথ্যে মামলা দেয়। অনেক সময় প্রতিবাদীদের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে তুলে নিয়ে আসে। এখন একজন তৃণমূল বিধায়ক এইভাবে একজন পুলিশ আধিকারিকের নাম করে তাকে হুশিয়ারি দিচ্ছেন, তারপরেও কেন পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয়তা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না? এতকিছুর পরেও কেন নীরবতা পালন করছেন এই রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী? কবে ব্যবস্থা হবে এই তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে? গোটা ঘটনায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।