প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্যের একটি বাচ্চাও এখন জেনে গেছে যে, অনুব্রত মণ্ডল কে? তিনি যে কুকীর্তি করেছেন, যে কদর্য ভাষায় একজন আইসিকে আক্রমণ করেছেন তার মা, বউ তুলে, তাতে ছিঃ ছিক্কার পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। কিন্তু সব কিছু জানার পরেও, বোঝার পরেও এই রাজ্যের একজন মন্ত্রী, যিনি খুব ভালো নাটক করেন, তিনি বাস্তবেও কি নাটক করার চেষ্টা করলেন? অনুব্রত মণ্ডল শুধু তার দলের নেতা বলেই কি তাকে আড়াল করার মরিয়া চেষ্টা করলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু? এমনিতেই তো পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রাজ্যের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আর তার মধ্যে একজন তৃণমূলের নেতা তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হয়ে ব্রাত্যবাবু যে কথা বললেন, তাতে বিরোধীদের কাছে স্পষ্টই যে, তৃণমূলের কতটা সবেধর নীলমণি এই অনুব্রত মণ্ডল!

কি ঘটনা ঘটেছে? এদিন ভাইরাল হওয়া অনুব্রত মণ্ডলের অডিও ক্লিপ, যা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য, সেই বিষয় নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি যেন আকাশ থেকে পড়লেন। এমন একটা ভাব করলেন ব্রাত্য বসু, যেন তিনি কিছুই শোনেননি, কিছুই বুঝেন না। ব্রাত্যবাবু বলেন, “না, আমি এসব শুনিনি। আমি ভালো করে শুনিনি। একটা ফোন-টোন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, এটা কাগজে পড়েছি।”

বিরোধীদের প্রশ্ন, ব্রাত্যবাবু কি আজকাল রাজ্যের খবর রাখছেন না নাকি? কোথায় কি হচ্ছে, তা কি টিভি বা মোবাইলে তিনি দেখেন না? চারদিন হয়ে গেল অনুব্রত মণ্ডলের এই ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে রাজ্যজুড়ে হৈ হৈ পড়ে গিয়েছে। কিন্তু চারদিন কি টিভি মোবাইল কোনোটাতেই চোখ বোলাননি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী? কাগজে তিনি পড়েছেন, অথচ গোটা বিষয়ে সেভাবে নাকি কিছুই জানেন না। আসলে জানেন না, সেটা নয়। জানলে বলতে হবে, আর বলতে গেলে মুখ পুড়বে, সেই জন্যেই বাস্তবে নাট্যকারের মতই গোটা বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার মত সুন্দর নাটক করে বেরিয়ে গেলেন ব্রাত্য বসু বলেই খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে তৃণমূলের কি ভাবনা, তা এতদিনে বোঝা হয়ে গেছে। শুধুমাত্র তার কাছে ক্ষমা চেয়েই তাকে মাফ করে দিয়েছে তৃণমূল। আর পুলিশ, সে তো তৃণমূলের থেকেও বড় অনুব্রত প্রেমী। নিজের অপমান বুঝে সহ্য করছে, কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করার সাহস তারা দেখাতে পারছে না। আর এসবের মধ্যেই ব্রাত্যবাবু, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, যার শিক্ষা দেওয়া কাজ, যিনি একজন সংস্কৃতি প্রবণ মানুষ, গোটা রাজ্যজুড়ে একটা ঘটনা নিয়ে তোলপাড়, অথচ রাজ্যের এই মন্ত্রী নাকি কিছুই জানেন না! তাহলে তো মমতা ব্যানার্জির উচিত, রাজ্যের কোনো খবর না রাখা এই মন্ত্রীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া। তিনি কি সেটা করবেন? নাকি সবকিছু জেনেও শুধুমাত্র না জেনে থাকতে হবে, বলতে গেলে বিতর্ক হবে, তাই যা হয়েছে হয়েছে, তা না বলাই থাক বলে এমন নাটক শিক্ষামন্ত্রীর? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।