প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের পুলিশ যে দলদাসের মত আচরণ করে, এক্ষেত্রে বিজেপি নেতাকর্মীরা বা রাজ্যের কোনো গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ যদি শাসকের বিরুদ্ধে কোথাও সোচ্চার হয়, তাহলে তাকে গ্রেফতার করতে দুবার ভাবে না পুলিশ। উল্টে তার বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে তাকে গ্রেফতার করার মত সাহস দেখিয়েছে এই রাজ্যের প্রশাসন। তবে তৃণমূলের নেতা বলে অনুব্রত মণ্ডল এক পুলিশ কর্তাকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করার পরেও তাকে এখনও পর্যন্ত ছাড় দিয়ে রেখেছে এই প্রশাসন। যার ফলে তাদের নির্লজ্জ এবং দলদাস বলেই বারবার করে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের জন্য যখন সাধারন মানুষ লড়াই করছেন, যখন তাদের বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষ সোচ্চার হচ্ছেন, তখন কেন পুলিশ মেরুদণ্ড নিয়ে সেই অনুব্রত মণ্ডলের মত নেতাকে ঘাড় ধরে জেলের ভেতরে ঢোকাতে পারছে না? তবে পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তা নিয়েই কি এবার বড়সড় বিপদ বাড়তে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্তার?

জানা গিয়েছে, এবার বীরভূমের এসপির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। একজন পুলিশকর্তা, তাকে ফোন করে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল তার মা, বউ তুলে গালিগালাজ করেছেন, কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এখানে মহিলাদের মান সম্মান নষ্ট হয়েছে। তাই এবার সশরীরে বীরভূমের পুলিশ সুপারকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। আর তাদের এই পদক্ষেপই রীতিমত ঘুম উড়িয়ে দিচ্ছে বীরভূমের পুলিশ সুপারের বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিরোধীদের দাবি, পুলিশ যদি বিন্দুমাত্র নিরপেক্ষ থাকত, তাহলে ঘটনা ঘটার পরের দিনেই অনুব্রত মণ্ডলের জায়গা হত জেলে। কিন্তু এত বড় কদর্য ভাষায় আক্রমণ করার পরে, একজন পুলিশ কর্তার মা-বউ তুলে গালিগালাজ করার পরেও তিনি দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করে বেড়াচ্ছেন। তার একটাই কারণ। কারণ, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হলেই তার জন্য সমস্ত দুষ্কর্ম করলেও , ছাড় রয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের মেরুদন্ডটা বিকিয়ে গেলেও, দেশে এখনও আইন রয়েছে। আর সেই কারণেই একজন পুলিশকর্তাকে হুমকি দেওয়ার পর যেভাবে অনুব্রত মণ্ডল বহাল তবিয়তে রয়েছেন, যেভাবে তাকে শুধুমাত্র তৃণমূল নেতা বলে ছাড় দিয়ে রাখা হয়েছে, তা খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তাই এবার বীরভূমের দলদাস পুলিশ সুপারকে সঠিকভাবেই শায়েস্তা করবে মহিলা কমিশন বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

তবে সকলেরই প্রশ্ন, জাতীয় মহিলা কমিশন সশরীরে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপারকে হাজিরা দেওয়ার কথা বললেও, তিনি কি আদৌ হাজিরা দেবেন? কারণ এই রাজ্যের পুলিশ তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া আর কাউকে কিছুই মনে করে না। তাদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যেন সর্বেসর্বা। কিন্তু যদি এত কিছুর পরেও বীরভূমের পুলিশ সুপার জাতীয় মহিলা কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে না মানেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কিন্তু আরও বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে। তবে যাই হোক না কেন, একটা বিষয় দিনের আলোর মত পরিষ্কার যে, অনুব্রত মণ্ডল যেভাবে একজন পুলিশ কর্তাকে হুমকি দিয়েছেন এবং যেভাবে তার মা, বউ তুলে কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, তাকে কিন্তু খুব একটা ভালো চোখে নিচ্ছে না জাতীয় মহিলা কমিশন। তাই এবার তারাও এই রাজ্যের প্রশাসনকে ফাঁপরে ফেলে শেষ পর্যন্ত এমন এক পদক্ষেপ নিয়ে নিলেন, যার ফলে বড়সড় চাপের মুখে পড়ে গেলেন রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।