প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যে পুলিশ এবং তৃণমূল যে সমার্থক, পুলিশ যে তৃণমূলের দলদাস হয়ে গিয়েছে, সেই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে বিরোধীদের। তারা এটাও বলেন যে, পুলিশ না থাকলে তৃণমূল এই রাজ্যে ক্ষমতায় টিকে থাকবে না। মিথ্যে মামলা করা থেকে শুরু করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা, সব ব্যাপারেই পুলিশকে কাজে লাগায় এই রাজ্যের শাসক দল। তবে এবার কি সেই পুলিশ দল তন্ত্রের উর্ধ্বে উঠতে শুরু করলো? ধীরে ধীরে তাদের বিবেক নাড়া দিতে শুরু করল যে, আর শাসকের হয়ে তাবেদারি করা যাবে না। আর সেই কারণেই মুর্শিদাবাদের এসপি প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে যে কথা বললেন, তাতে যারা গুন্ডা, যারা শাসকদলের আশ্রয়ে থেকে মানুষের ওপর অত্যাচার করে, তাদের ঘুম কিন্তু উড়তে শুরু করছে।

জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের উত্তপ্ত পরিস্থিতির পরেই সেখানে এসপি বদল করা হয়। বর্তমানে সেই জেলার দায়িত্বে রয়েছেন আইপিএস কুমার সানি রাজ। আর তিনি সম্প্রতি ডোমকলের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে যে কথা বলেছেন, তাতে রীতিমত চমকে উঠছেন সন্ত্রাসবাদী থেকে শুরু করে গুন্ডারা। ইতিমধ্যেই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে মুর্শিদাবাদের নয়া এসপির। যেখানে আইনের ঊর্ধ্বে যে কেউ নয়, দাপটের সঙ্গে এলাকায় ঘুরে বেড়ালে যে তিনি কেউকেটা হয়ে যাবেন না, সেই কথাও শুনিয়ে দিয়েছেন এই আইপিএস কর্তা।

ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে ডোমকলের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে মুর্শিদাবাদের নতুন এসপি কুমার সানি রাজ বলেন, “আপনারা তিনটে চারটে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে পারেন। ভাবতে পারেন, এলাকায় আমি বড়লোক। ভাই সরকারের সামনে কে আপনি? সরকারের সামনে কোনো একজন মানুষের কোন ক্ষমতা আছে নাকি? নেই। এমএলএ, এমপি, পুলিশ সকলকে নিয়ে তৈরি হয় সরকার। একটা প্রশাসন চলে। একজন, দুজন, তিনজন সরকারের থেকে বড় হতে পারে কি?” শুধু তাই নয়, তিনি কোনো সুপারিশ নিয়ে যে এখানে আসেননি, নিজের ক্ষমতায় যে এসেছেন, সেই কথাও স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন নতুন পুলিশকর্তা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের পুলিশ তো এমনই ছিল। কিন্তু তৃণমূল সরকারের আমলেই পুলিশের এমন রুপ সামনে এসেছে। যেখানে পুলিশের অপরাধীদের ধরার কথা, সেখানে পুলিশ আজ সেই দুষ্কৃতীদের ভয়ে টেবিলের তলায় লুকিয়ে পড়ে। প্রশাসনের বেশিরভাগটাই আজ দলীয়করনে পরিনত হয়েছে। তবে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একজন এসপি সাহস করে যখন এই ধরনের কথা বলছেন, তখন নিশ্চয়ই তা সাধুবাদ যোগ্য জানানোর মত। তবে বাইরে এই ধরনের কথা বলে ভেতরে ভেতরে আবার ওপর মহলের চাপ বদলে যাবেন না তো এই পুলিশ কর্তা, সেটা নিয়েই সবচেয়ে বড় সংশয় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।