প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় যারা হিন্দু রয়েছেন, তাদের বেছে বেছে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সম্প্রতি এই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কারণ বিজেপির দাবি যে, তৃণমূল খুব ভালো মতই জানে, তারা হিন্দু বাঙ্গালীদের ভোট পাবে না। তাই বেছে বেছে কিভাবে হিন্দুদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হয় এবং কি করে রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীদের সেখানে জায়গা দিতে হয়, তার চেষ্টা চালাচ্ছে এই রাজ্যের শাসক দল। তবে গতকাল রাজ্যে এসে নেতাজী ইন্ডোরের সভা থেকে অমিত শাহ যে কথা বললেন, তাতে যদি এটা সত্যি হয়, তাহলে তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে গভীর চক্রান্ত, তা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ার পর্যায়ে চলে এসেছে বলেই মনে করছেন একাংশ।
জানা গিয়েছে, যারা হিন্দু শরণার্থী রয়েছেন, তাদেরকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার গভীর চক্রান্ত চালাচ্ছে এই রাজ্যের প্রশাসন। আর সেই খবর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে। গতকাল নেতাজী ইন্ডোরের সভা থেকে সেই অমিত শাহ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন যে, কেউ ভয় পাবেন না। এইরকম নোটিশ করে কাউকে ভোটদানের অধিকার থেকে বিরত রাখতে পারবেন না এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বিজেপি যে সমস্ত আঁটঘাট এবং কৌশল তৈরি করেই ময়দানে নামছে এবং সমস্ত খবর যে তাদের কাছে রয়েছে, তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট।
গতকাল নেতাজি ইন্ডোরের সভায় বিজেপি কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল সরকারের চালাকি ধরে ফেলেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, “চার দিন আগে শান্তনু ঠাকুর আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি বলেন, সব হিন্দু শরণার্থীকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমি শান্তনুজীকে বলেছি, ভয় পাবেন না। যারা নোটিশ পাবেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের আওতায় আবেদন কারণ। তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা আমি করব। মমতাজির নোটিশে কারও ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। শরনার্থী ভাইয়েরা যাতে ভোটদানের অধিকার পান, সেই জন্য মোদীজি সিএএ আইন এনেছেন।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার এই ২০২৬-এ যদি ঠিকমত নির্বাচন হয়, যদি নির্বাচন কমিশন সঠিক ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে পারে এই বাংলায়, তাহলে কোনোমতেই হিন্দু বাঙ্গালীদের ভোট তৃণমূলের দিকে যাবে না। কারণ, হিন্দুরা এই সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর তার মধ্যে যারা হিন্দু শরণার্থী, তারা যদি ভোট দানের ক্ষমতা রাখেন, তাহলে তো আরোই বিপদের মুখে পড়বে তৃণমূল। আর সেই সমস্ত হিন্দু শরণার্থীদের যাতে নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায়, তার জন্যই তৃণমূলের ভেতর থেকে একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আর সেই খবর শান্তনু ঠাকুরের মাধ্যমে পৌঁছে গিয়েছে অমিত শাহের কাছে। তাই তিনিও হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা দিয়ে এই রাজ্যের শাসকের যে চক্রান্ত, তাকে পুরোপুরি ভাবে ভেস্তে দিয়ে তৃণমূলের বিপদ অনেকটাই বাড়িয়ে দিলেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।