প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কি বিন্দুমাত্র লজ্জা বলতে কিছু নেই? একের পর এক এই রাজ্যে ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু তারপরেও তিনি এবং তার সরকার বহাল তবিয়তে মাথা উঁচু করে বড় বড় কথা বলেই চলেছেন। বর্তমানে ২৬ হাজার চাকরি যাওয়া থেকে শুরু করে অনুব্রত মণ্ডলের পুলিশের উদ্দেশ্যে কদর্য আক্রমণ, তা নিয়ে জেরবার রাজ্য। তবে অতীতেও তো এই রাজ্যে কম ঘটনা ঘটেনি।

আরজিকর থেকে শুরু করে সন্দেশখালি, তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুন থেকে শুরু করে মা-বোনেদের রাত্রিবেলা ডেকে পিঠে বানানোর খবর রাজ্যবাসীর সামনে এসেছে। আর এবার সেই বিষয় নিয়েই বাংলায় এসে অমিত শাহ যে কথা বললেন, তাতে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি লজ্জা থাকে, তাহলে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আর এই সমস্ত বিষয়ে বড় বড় গলায় কথা বলার মত সাহস দেখাবেন না বলেই দাবি করছেন বিরোধীরা।

কি বলেছেন অমিত শাহ? গতকাল নেতাজি ইন্ডোরে বিজেপি কর্মীদের নিয়ে একটি সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যেখানে আরজিকর এবং সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। স্পষ্ট ভাষায় অমিত শাহ বুঝিয়ে দেন যে, সন্দেশখালি এবং আরজিকরে যারা অভিযুক্ত, তারা তৃণমূল দলের ঘনিষ্ঠ। অর্থাৎ এই রাজ্যের দুটি স্পর্শকাতর ঘটনা, যা রাজ্যবাসীর মনে ছাপ ফেলে দিয়েছিল, সেই দুটি ঘটনাকেই হাতিয়ার করে অমিত শাহ রীতিমত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরাট একটা ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

আর এটাও তো অত্যন্ত সত্যি ঘটনা যে, এই সন্দেশখালি এবং আরজিকর নিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল, যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে, যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল সমাজের সর্বস্তরে, তাতে রীতিমত বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল তৃণমূল। তাই সেই সমস্ত পুরনো ঘটনার স্মৃতি কিছুটা উসকে দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের যে বিদ্রোহ, তাতে ঘৃতাহুতি দেওয়ার চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিন অমিত শাহ বলেন, “মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে আরজিকর মেডিকেল কলেজের মত ঘটনা ঘটে যায়। সন্দেশখালিতে গরিব মায়ের ওপর অত্যাচার হয়। তিনি নিজের ভোটব্যাংক নিয়ে বসে থাকছেন। আমি জানতে চাই, সন্দেশখালির মূল অভিযুক্ত কোন দলের ছিলেন? আরজিকরের অভিযুক্ত কোন দলের সঙ্গে যুক্ত?” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা বলতে হবে না যে, সন্দেশখালির ঘটনায় কার নাম প্রথম থেকেই সামনে এসেছে! বর্তমানে জেলে রয়েছেন শেখ শাহজাহান। তার কুকীর্তি নিয়ে সেখানকার মানুষই সোচ্চার হয়েছিলেন। আর সেই শেখ শাহজাহান যে তৃণমূলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, তা সকলেই জানেন।

অন্যদিকে আরজিকরে সিভিক ভলেন্টিয়ারের কুকীর্তি প্রকাশ্যে আসার পর সোচ্চার রাজ্যবাসী দীর্ঘদিন রাস্তায় ছিলেন। এমনকি সন্দীপ ঘোষ, যিনি আরজিকর মেডিকেলের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, তার সঙ্গে এই শাসকের ঘনিষ্ঠতার জন্যই তিনি বেঁচে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছিলেন সকলে। বর্তমানে তারা অবশ্য জেলের ঘানি টানছেন। তবে সেই তিক্ত ঘটনাগুলি কেন এই রাজ্যের বুকে ঘটছে, এর পেছনে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাংক এবং ষড়যন্ত্রমূলক প্রশ্রয় দায়ী, সেটাই ঘুরিয়ে বুঝিয়ে দিলেন অমিত শাহ।

আর এখানেই বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন যে, অমিত শাহের মত সর্বভারতীয় স্তরের একজন হাইপ্রোফাইল নেতা তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় এসে সেখানকার আরজিকর এবং সন্দেশখালি নিয়ে কথা বলছেন। এরপরেও কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত বিষয় নিয়ে তার দলকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করে যাবেন? তার লজ্জা হবে না? অমিত শাহের মত একজন সর্বভারতীয় মুখ বাংলার এই দুই এলাকার ঘটনা নিয়ে যেভাবে মুখ খুলছেন, তাতে তিনি আর পাল্টা কিছু বলার মত জায়গায় থাকবেন তো? প্রশ্নটা তুলছে সমালোচক মহল।