প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বর্তমানে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সবথেকে বেশি যে ইস্যু নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগেছে, তা হচ্ছে, ভোটার তালিকায় সংশোধন। বিজেপির দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন করা প্রয়োজন। কারণ তা না হলে গোটা দেশের স্বাভাবিক ভোটার লিস্টে যে বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে, তার থেকে অনেকটাই ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ। যেখানে তড়িৎ গতিতে ভোটার তালিকায় বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। আর এটাই সংশয়ের কারণ। এখানে প্রচুর পরিমাণে রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। তাই সেই সমস্ত ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। যদিও বা তৃণমূলের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলা ও বাঙালিকে হেনস্তা করতেই বিজেপি এই সমস্ত পরিকল্পনা করছে। আর এসবের মাঝেই এবার দুধ এবং জল আলাদা করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

বস্তুত, এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আর সেখানেই যেভাবে রাজারহাট, নিউটাউন সহ রাজ্যের প্রায় সিংহভাগ বিধানসভা কেন্দ্রে তড়িৎ গতিতে ভোটার তালিকায় বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুভেন্দুবাবুর আশঙ্কা যে, এখানেই রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীরা লুকিয়ে রয়েছে। কারণ তা না হলে গোটা দেশে ভোটার তালিকায় যে স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়, তার থেকে অনেকটাই ব্যতিক্রম এই পশ্চিমবঙ্গ। যেখানে প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভোটার তালিকায় বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, গোড়ায় গলদ রয়েছে।

এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মানুষ শুনতে চায়, গত ২০১৬ সাল থেকে ৫৪০০ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাতে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, বিএসএফ জমি চাওয়ার পরেও জমি না দেওয়ার কারণটা কি? মানুষ জানতে চায়, প্রায় ৮০ টি বিধানসভা কেন্দ্রে রাজারহাট নিউটাউন সহ যেখানে গোটা দেশে স্বাভাবিক ভোটার তালিকায় বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ, সেখানে ২০১৪ সাল থেকে এইখানে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভোটার বৃদ্ধি হলো কেন?”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করা শুভেন্দুবাবু খুব ভালো মতই জানেন, কোথায় কি প্রক্রিয়া চলছে! তাই তিনি একদম সঠিক জায়গায় আঘাত করেছেন। তার একটাই দাবি যে, পশ্চিমবঙ্গকে রোহিঙ্গা মুক্ত করতে হবে। আর এই দাবির সঙ্গে যে তৃণমূলের নেতারা কোনোমতেই সহমত হতে পারছেন না, তা তাদের গতিবিধিতেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে বাংলার ভোটার তালিকায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ লোকের নাম যেভাবে বৃদ্ধি হতে দেখা যাচ্ছে, তাতে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রশ্ন উঠছে যে, এর পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র নেই তো? সুক্ষভাবে কি সেই সমস্ত রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীদেরই এই ভোটার তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়ে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করেছে রাজ্যের শাসক দল? স্বাভাবিকভাবেই দুধ এবং জলকে আলাদা করে দিয়ে এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।