প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
সত্যিই কি বাংলার একটা অংশের সংবাদমাধ্যমের সংবাদ পরিবেশন করার মত কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নেই! নাকি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য কোনো বিষয়ের দিকে দৃষ্টিপাত না করে প্রায় সাড়ে তিন বছরের মত সময় জেল খেটে আসা একজন ব্যক্তিকে নিয়ে দিনভর চর্চা করছে! শুধু তাকে নিয়ে নয়, তিনি বাড়ি ঢোকার সময় তাকে বরণ করা হচ্ছে, তিনি বাড়িতে ঢুকে কি করছেন, তারপর তার পোষ্যর সঙ্গে তিনি কিভাবে সময় কাটাচ্ছেন, ধরে ধরে সেই সমস্ত বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশন করতে দেখা যাচ্ছে একটা অংশের মিডিয়াকে। আজকেও একটা অংশের সংবাদমাধ্যম পার্থ চ্যাটার্জিকে নিয়ে দিনভর খবর পরিবেশন করেছেন। তিনি কি বলছেন, তিনি কি ভাবছেন, তিনি কি করবেন, ইত্যাদি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি এই মানুষটিকে নিয়ে আর আলোচনা করা যায়? যার সঙ্গে দুর্নীতির যোগাযোগ, যিনি সাড়ে তিন বছরের মত সময় জেল খেটে এসেছেন, যার হাঁটুর বয়সী বান্ধবী, তাকে নিয়ে কি সত্যিই আলোচনা করা বাংলার সংবাদমাধ্যমের কাজ? এবার সেই প্রশ্নই তুলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এই বাংলার বুকে এসআইআর থেকে শুরু করে দুর্নীতি থেকে শুরু করে অনেক খবর করার মত দায়িত্ব রয়েছে দায়িত্বশীল সংবাদ মাধ্যমগুলোর। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে গতকাল থেকেই সেই সমস্ত সংবাদ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিরোনামে উঠে এসেছেন। তিনি বাড়িতে ঢুকছেন, তাকে বরণ করা হচ্ছে, সেটাও নাকি সংবাদ মাধ্যমের দেখানোর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে! আজকে আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, তার বান্ধবী থাকতেই পারে, এতে দোষের কিছু নয়। আর তার গর্ব করে বলা এই কথা ফলাও করে প্রচার করছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। সত্যিই কি এই মানুষটি সম্পর্কে এইভাবে দেখিয়ে সেই সমস্ত সংবাদমাধ্যমে টিআরপি বাড়ছে? জনমানসে কি তারা প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে না? যেভাবে বেকার যুবকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, যেভাবে দীর্ঘদিন জেল খেটে এসেছেন এই মানুষটি, তারপরেও তাকে নিয়ে এই ধরনের আদিখ্যেতা কেন বাংলার একটি অংশের সংবাদমাধ্যমের? তাই যারা পার্থ চ্যাটার্জিকে নিয়ে খবর করছেন, তাদের দেখে করুণা হচ্ছে বলেই মন্তব্য করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই আবার তাকে পার্থ চ্যাটার্জিকে নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর তার উত্তরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমি পার্থ চ্যাটার্জি সম্পর্কে উত্তর দেব না। আমার শুধু বাংলার চ্যানেলগুলোর দিকে তাকিয়ে কৃপা হচ্ছে। এইরকম একটি অসৎ, দুশ্চরিত্র লোক, আপনারা তার কুকুরকে দেখাচ্ছেন! কোথায় গেছেন আপনারা? যারা এগুলো করছেন, লোক দেখবে না। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের জায়গা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গা, স্বামী বিবেকানন্দ এখানে জন্মেছেন। একটা অসৎ লোক, তার হাঁটুর বয়সী বান্ধবী, তার বাড়ি থেকে ৫১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। তার নিজের জামাই রাজসাক্ষী হয়েছেন। আর আপনারা তাকে হিরো করছেন! তিনি কি খেয়েছেন, তাকে আরতি করছে ভজা। এগুলো দেখাচ্ছেন।” আর তারপরই রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী আবেদন জানান যে, যখনই এই সমস্ত চ্যানেল পার্থ চ্যাটার্জিকে নিয়ে দেখাবে, তখনই সেই চ্যানেলের বদলে অন্য চ্যানেল দেখবেন। প্রয়োজন হলে বিনোদনের ক্ষেত্রে বাচ্চাদের পোগো চ্যানেল দেখারও বার্তা দেন তিনি।