প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বাংলায় নির্বাচন এবং সন্ত্রাস কার্যত সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যেকটি নির্বাচনেই গায়ের জোরে ভোট নিয়ে তৃণমূলের গুন্ডা এবং পুলিশের সহযোগিতায় নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয় বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রত্যেকটি নির্বাচনেই যখন এই পরিস্থিতি, তখন উপ নির্বাচনে যে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল সন্ত্রাস করে গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করবে, তা বিরোধীদের জানা কথা।
তাই উপনির্বাচনে তারা খুব একটা মাথা লাগাতে রাজি নয়। তবে বাংলার পরিস্থিতি বুঝে কমিশন এবার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলার সামান্য এক বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে, তাতেই বুঝে যেতে হবে যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যদি এই মত করে পদক্ষেপ হয়, তাহলে অবৈধ উপায়ে ভোট নেওয়ার কৌশল বন্ধ হয়ে যাবে তৃণমূলের বলেই মনে করছেন একাংশ।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৯ জুন বাংলা সহ দেশের চার রাজ্যের পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হবে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার কালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র। আর সেই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এবার কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। যেখানে ইতিমধ্যেই কমিশনের পক্ষ থেকে ১৮ থেকে ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেকটি বুথে ওয়েব কাস্টিং হবে বলেও জানা যাচ্ছে।
আর কমিশনের এই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে স্বাগত জানাচ্ছে বিরোধীরা। তবে তাদের বক্তব্য, এত কিছু করে লাভের লাভ কিছু হবে না। কারণ এই রাজ্যের পুলিশকে না সরালে প্রত্যেকটি নির্বাচন এই জয়লাভ করবে তৃণমূল। কারণ পুলিশ তাদের দলদাসে পরিণত হয়েছে। তাদের সাহায্যেই ভোট লুট করছে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। আর একেই এটা উপনির্বাচন, এখানে যে প্রার্থী জিতবেন, তিনি আর ৭-৮ মাস সময় পাবেন।
তারপর নতুন করে রাজ্যে হবে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এই উপনির্বাচন নিয়ে কারও কোনো আগ্রহ নেই। এইরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আগামী ২৬ এ বিধানসভা নির্বাচন যাতে প্রহসনে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। তাহলেই বাংলার মানুষ নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে বলেই দাবি বিরোধীদের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলায় নির্বাচন হলে কিভাবে গায়ের জোরে ভোট হয় এবং শাসক কিভাবে পুলিশ এবং সমাজ বিরোধীদের কাজে লাগায়, তা সকলেরই জানা। আর এমনিতেও উপনির্বাচনের রায় শাসকের পক্ষেই যায়। কিন্তু যে বাংলায় সামান্য সমবায় সমিতির ভোটেও হিংসা হয়, ক্ষমতা দখল করার জন্য সব রকম শক্তি কাজে লাগায় শাসক দল, সেখানে এতসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেও কি আদৌ সাফল্য পাবে নির্বাচন কমিশন? যদি সাফল্য পায়, তাহলে অবশ্যই তা সাধুবাদ যোগ্য। আর দিনের শেষে যদি নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়ে যায়, তাহলে আগামী ২৬ এর জন্য বাংলা নিয়ে নতুন কিছু ভাবতে হবে কমিশনকে।
কারণ দেশের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে বাংলাকে গুলিয়ে ফেললে ভুল করবে কমিশন। কারণ বাংলায় নির্বাচন মানেই সন্ত্রাস। তাই যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত, যারা শাসকের বদান্যতায় দলদাসে পরিণত হয়েছেন, সেই সমস্ত পুলিশ থেকে শুরু করে গুন্ডাবাহিনীকে টাইট দেওয়ার জন্য আগামী ২৬ এর নির্বাচনের দিকেই সব থেকে বেশি কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে জোর দিতে হবে কমিশনকে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।