প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই চড়ছে রাজ্যে। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপি উভয়েই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পূর্ণ উদ্যমে। তবে এই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আবহে বড় ধাক্কা খেল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগরে শতাধিক নেতা-কর্মী তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিলেন বিজেপিতে। এতে নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ জেলা মালদহে পদ্ম শিবিরের শক্তি যে একধাপ বাড়ল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বৈষ্ণবনগরে আয়োজিত একটি বিশাল যোগদান সভায় এই রাজনৈতিক রদবদল ঘটে। সভার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির এক নম্বর মণ্ডল সভাপতি অমরনাথ ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন পদ্ম নেতা তারক ঘোষ, বিশ্বজিৎ রায়, বিধান মণ্ডল, শ্যামলী রজক ও উজ্জ্বল দত্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীরা। এই সভায় তৃণমূলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কিছু পদাধিকারী সহ শতাধিক কর্মী বিজেপির পতাকা তুলে নেন। তাঁদের দাবি, তৃণমূলে থেকে তাঁরা দুর্নীতি ও দলীয় বিশৃঙ্খলায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। সেই কারণেই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে বাধ্য হন।
সদ্য তৃণমূল ত্যাগী এক ছাত্রনেতা বলেন, “আমি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু সাম্প্রতিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ফলে হাজার হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। একজন ছাত্র হিসেবে আমি এই অবিচার মেনে নিতে পারি না। তাই আমরা তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বিজেপিতে এসেছি।” একই সুরে বিজেপি নেতারাও বলেন, তৃণমূল মানেই দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সাধারণ মানুষের বিশ্বাসঘাতকতা। তাই আজ সাধারণ কর্মীরাই সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন, এবং সৎ রাজনীতির আশায় বিজেপির পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ বরাবরই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের জন্য পরিচিত এলাকা, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করা হয়। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মালদহ উত্তরে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু জয়ী হয়েছিলেন, এবং মালদহ দক্ষিণে কংগ্রেস। এই পটভূমিতে, তৃণমূলের এতজন কর্মীর দলত্যাগ মালদহে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি ঘটিয়েছে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে যে এবারের লড়াই হবে চরম উত্তেজনাপূর্ণ, এবং দলবদলের এই প্রবণতা আগামী নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।