প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান বিশ্ব দরবারে আরও স্পষ্ট করতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে গঠিত হয় এক সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল। এই দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া-সহ মোট পাঁচটি দেশে এই প্রতিনিধিদল সফর করে। নেতৃত্বে ছিলেন জেডিইউ সাংসদ সঞ্জয় ঝা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিদেশ সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থান তুলে ধরা এবং পাকিস্তান-প্রশ্রুত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব হওয়া।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর কেন্দ্র ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে জঙ্গিদের ঘাঁটি ধ্বংস করে। সেই ঘটনার পরই ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বার্তা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এই কর্মসূচি সফলভাবে শেষ করে গত সপ্তাহেই কলকাতায় ফেরেন অভিষেক। তবে পরদিনই, বুধবার, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ডাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ না করেই কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে অভিষেক জানান, কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের প্রচারের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির কারণে দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয়।
তবে সূত্রের খবর, এই প্রতিনিধিদলকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা একটি বিশেষ নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সফর থেকে ফিরে আসা সাংসদদের উদ্দেশ্যে এই নৈশভোজের আয়োজন। জানা যাচ্ছে, সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বার্তা আগেই দিয়েছেন তিনি। একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকলেও দেশের নিরাপত্তা এবং স্বার্থ যেখানে জড়িত, সেখানে সব ধরনের দলীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন বলে বিদেশ সফরের সময় অভিষেক মন্তব্য করেন।
বিদেশ সফরের সময়ও অভিষেক পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোরালো সুরে বক্তব্য রাখেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদকে মদত দিয়ে যে দেশ নিজের ভূখণ্ডে রক্তগঙ্গা বইতে দিচ্ছে, তাদের মুখোশ খুলে দেওয়া জরুরি। তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল, তিনি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হলেও দেশের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপসের জায়গা নেই। এই অবস্থান অভিষেকের রাজনৈতিক পরিপক্বতার পরিচায়ক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে তাঁর উপস্থিতি এক ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে জাতীয় রাজনীতিতে। দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থে কাজ করাই যে সময়ের দাবি, তা যেন ফের একবার প্রমাণ করলেন তৃণমূল সাংসদ।