প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রেপোর্ট-  বিধানসভা নির্বাচন এক বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, আর তার আগেই বড়সড় সাংগঠনিক রদবদলের পথে হাঁটল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার দলীয় তরফে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বারাসাত সাংগঠনিক জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য কমিটি পর্যন্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোকে মজবুত করতে এবং আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিকে চূড়ান্ত রূপ দিতে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বারাসাত সাংগঠনিক জেলায় চেয়ারপারসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সব্যসাচী দত্তকে, যিনি এক সময় বিজেপিরও গুরুত্বপূর্ণ মুখ ছিলেন। আবার জেলা সভাপতি পদে স্থির রাখা হয়েছে প্রবীণ সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। এই দুই নেতার অভিজ্ঞতা এবং প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার এই গুরুত্বপূর্ণ জেলায় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চায় তৃণমূল। দলের তরফে জানানো হয়েছে, নেতৃত্বের এই রদবদলের মাধ্যমে বারাসাতে বুথ স্তর থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যন্ত কার্যত এক নতুন বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

রাজ্য স্তরের কমিটিতেও এসেছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক মুখ শংকর মালাকারকে তৃণমূলের রাজ্য মাদার কমিটির সহ-সভাপতি করা হয়েছে। কংগ্রেস থেকে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁর বড় পদ পাওয়ার জল্পনা ছিল। এবার সেই জল্পনাই সত্যি হল। বর্ষিয়ান এই নেতাকে রাজ্য নেতৃত্বে অন্তর্ভুক্ত করে কংগ্রেসের সংগঠনেও একটি বড় ধাক্কা দিতে চায় তৃণমূল। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে কাসেম সিদ্দিকীকে, যিনি আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর তুতো ভাই। তাঁর নিয়োগ তৃণমূলের তরফে ফুরফুরা শরীফের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের দিকেও বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই রদবদলের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে দল সংগঠনের প্রতিটি স্তরে নতুন ছন্দে কাজ করতে প্রস্তুত। বিশেষত রাজনীতির মাটিতে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ এবং বিজেপি-আইএসএফ-কংগ্রেস জোটের সম্ভাবনা মাথায় রেখে সংগঠনকে পুনর্গঠনের এই প্রয়াস আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তৃণমূল এখন চাইছে নির্বাচনের আগেই ঘর গুছিয়ে মাঠে নামতে, এবং এই রদবদল সেই লক্ষ্য পূরণের প্রথম ধাপ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।