প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গত কয়েকদিন ধরে স্মার্ট মিটার ইস্যুতে রাজ্যজুড়ে উত্তেজনার আবহে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। একাধিক জায়গা থেকে অভিযোগ ওঠার পর আপাতত গৃহস্থ বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার বিদ্যুৎ দফতরের তরফে জারি হওয়া একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি বাড়িতে এই স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছিল ঠিকই, কিন্তু তার ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ায় আপাতত সেই প্রকল্প স্থগিত রাখা হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্যিক সংস্থার ক্ষেত্রে যদিও এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে না।
স্মার্ট মিটার ঘিরে অস্বাভাবিক বিলের অভিযোগ আসতে শুরু করে একাধিক অঞ্চলে। হুগলির রবীন্দ্রনগর কালীতলার বাসিন্দারা বিদ্যুৎ দফতরের সামনে এসে সরাসরি বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের অনুমতি ছাড়াই জোর করে বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তার পর থেকেই বিদ্যুৎ বিল অনেক বেড়ে গিয়েছে। এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, যেখানে আগে মাসে ৮০০-১০০০ টাকা বিল আসত, সেখানে এখন বিল এসেছে ৪০০০ টাকার বেশি। একই ধরনের অভিযোগ হুগলির ব্যান্ডেলের এক পরিবারও তোলে, যেখানে তাদের একমাসে বিল এসেছে ১২ হাজার টাকা।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে প্রায় ১.৬ লক্ষ স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ থমকে দাঁড়াল। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ মিটার গৃহস্থ বাড়িতে বসানো হয়েছিল, আর বাকি ৩৫ শতাংশ বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, স্মার্ট মিটার ইস্যুতে বারাসাতের চাঁপাডালি মোড়ে বাসিন্দারা যে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, তার খবর পৌঁছে যায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই বিদ্যুৎ দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয় এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য।
যদিও কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক ইতিমধ্যেই দেশের সমস্ত রাজ্যকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে স্মার্ট মিটার বসানোর নির্দেশ দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে সেই নির্দেশ মেনে কতটা অগ্রসর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একদিকে প্রযুক্তি ব্যবহারে আধুনিকীকরণের চাপ, অন্যদিকে জনরোষ ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ—এই দুইয়ের মাঝে রাজ্য সরকারের কী অবস্থান হবে, তা নিয়ে এখন জোর চর্চা চলছে। তবে আপাতত গ্রাহকদের স্বস্তি দিতে এই সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও চাপ কমাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।