প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পানিহাটির যুবতী নির্যাতনের ঘটনায় শ্বেতা খান ও তাঁর ছেলে আরিয়ানের নাম সামনে আসার পর থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। অভিযোগ, মা-ছেলে মিলে একটি সফট পর্ন র্যাকেট চালাতেন এবং বর্তমানে তাঁরা পলাতক। হাওড়া সিটি পুলিশ তাঁদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। এই আবহেই, শ্বেতার অতীত ও তাঁর ‘কীর্তি’ ঘিরে নতুন তথ্য সামনে আনলেন তাঁর প্রাক্তন স্বামী মহম্মদ সৈয়দ মোরসেলিম, যিনি নিজেও হাওড়া ও মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলে কাপড়ের বড় ব্যবসায়ী ছিলেন।
মোরসেলিম অভিযোগ করেন, শ্বেতার লালসা ছিল শুধুই টাকার প্রতি। বিয়ের পর থেকেই শ্বেতা তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন। শুধু তাই নয়, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও নিগ্রহ করতেন তিনি। মোরসেলিম দাবি করেন, তিনি বাড়িতে থাকাকালীন শ্বেতা বিভিন্ন পুরুষ বন্ধুদের ডেকে ঘরে ‘ফুর্তি’ করতেন। শ্বেতার আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে শেষমেশ তিনি বাড়ি ছেড়ে হুগলির ফুরফুরা শরিফে চলে যান এবং সেখানেই এখন স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
শুধু ঘরোয়া নির্যাতনই নয়, শ্বেতার বিরুদ্ধে সম্পত্তি কুক্ষিগত করার অভিযোগও তুলেছেন মোরসেলিম। তিনি জানান, তাঁর বাবা যখন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি, সেই সময় শ্বেতা বাড়ির মূল দলিল নিয়ে গিয়ে নিজের নামে লিখিয়ে নেন। তাঁর দাবি অনুযায়ী, এই মহিলাই গোটা পরিবারটিকে শেষ করে দিয়েছেন। এমনকি তাঁদের মেয়ে ইশিকার আত্মহত্যার জন্যও শ্বেতার চাপ ও মানসিক নির্যাতন দায়ী বলে মোরসেলিম অভিযোগ করেন।
২০০২ সালে মহসিনা খাতুন ওরফে ফুলটুসির সঙ্গে মোরসেলিমের বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান ছিল। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই অশান্তি শুরু হয়। প্রাক্তন স্বামীর অভিযোগ, শ্বেতা ধীরে ধীরে বাড়ির সমস্ত মূল্যবান আসবাব ও সম্পত্তি নিজের দখলে নিয়ে নেয় এবং প্রতিবাদ করলেই মারধর করত, এমনকি মুখে থুতু ছিটিয়ে অপমানও করত। পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে তিনি ২০০৮ সালে বাঁকড়ার বাড়ি ছেড়ে যান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফকিরপাড়ার সেই সম্পত্তিতে বর্তমানে ভাড়াটে বসানো আছে এবং সেখান থেকে আসা ভাড়ার টাকাও শ্বেতার হাতেই যায়।
এই ঘটনায় হাওড়া জুড়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পুলিশ ইতিমধ্যেই বাঁকড়ার বন্ধ ফ্ল্যাটে ঢোকার চেষ্টা করেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। যদিও এখনও পর্যন্ত শ্বেতা ও আরিয়ান ধরা পড়েনি। রাজনৈতিক জগতের সঙ্গে শ্বেতার যোগ ও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তিগত অভিযোগ মিলে এই কাণ্ড এখন রীতিমতো রাজ্য রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।