প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতে শুরু করে। যেখানে বোলপুরের পুলিশ কর্তাকে হুমকি এবং অশ্লীল গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তবে প্রশ্ন ছিল যে, এই অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল কিনা! গোটা বিষয়টি তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, যখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে পুলিশ কর্তাকে এহেন মন্তব্য করার জন্য দলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সেই অনুব্রত মণ্ডল। তবে প্রশ্ন উঠছে যে, শুধুমাত্র ক্ষমা চাইলেই কি সাত খুন মাফ? পুলিশ কি তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে পুলিশ মন্ত্রী, সেখানে কি তার গায়ে লাগছে না, তার এক পুলিশ কর্মীকে তার দলেরই নেতা এই ধরনের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করলেন, আর তিনি সেই নেতাকে ছেড়ে দিতে পারবেন? তাকে জেলের ঘানি টানাবেন না?

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের চাপ বাড়িয়ে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। যেখানে বীরভূম জেলা তৃণমূলের এই কোর কমিটির নেতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পাশাপাশি সেই অনুব্রত মণ্ডলের কাছে একটি নোটিশও পৌঁছে গিয়েছে। যেখানে আগামী কাল অর্থাৎ শনিবার তাকে বোলপুর থানায় হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, শুধুমাত্র থানায় ডেকে জেরা করেই কি ছেড়ে দেওয়া হবে?

বিরোধীরা বলছেন, ভেতরে জেরা হচ্ছে, নাকি অনুব্রত মণ্ডলকে চা মিষ্টি খাইয়ে আরও বেশি করে সমাদর করা হচ্ছে, সেটা তো কেউ দেখতে যাচ্ছে না। তবে পুলিশ যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছে, তাতে মনে হচ্ছে যে, তাদের আত্মসম্মানে কিছুটা হলেও লেগেছে তৃণমূল নেতার এই ধরনের অশ্লীল গালিগালাজ। তাই এবার পুলিশকেই মেরুদন্ড সোজা রেখে একটা পদক্ষেপ নিতে হবে। নিজেদের আত্মসম্মান বজায় রাখার জন্য কোনো কিছু না শুনে সরাসরি যতটুকু জেরার জন্য প্রয়োজন, তা জেনে একেবারে জেলের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া উচিত এই অনুব্রত মণ্ডলের মত অপদার্থ নেতাকে বলেই দাবি করছেন বিরোধীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশ যদি নিজেদের মেরুদন্ড সোজা রেখে অনুব্রত মণ্ডলকে সত্যিই জেরা করেন এবং এই ঘটনার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারেন, তাহলে মমতা পুলিশকে সাবাসি দিতেই হবে। কিন্তু তারা কি সেই পদক্ষেপ নেওয়ার মত সাহস দেখাবেন? নবান্নের ১৪ তলা থেকে কি এই সবুজ সংকেত আছে? যদি সবুজ সংকেত থাকে, তাহলেই তারা গ্রেফতার করার মত সাহস দেখাবেন। আর যদি না থাকে, তাহলে লাভের লাভ কিচ্ছু হবে না। সাধারণ মানুষ তাকিয়ে থাকবেন টিভির দিকে, আর দিন শেষে হাসিমুখে আবার জেরা থেকে বেরিয়ে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াবেন অনুব্রত মণ্ডল।

তবে অনেকে আবার বলছেন, সামনে যেহেতু বিধানসভা নির্বাচন, আর তার আগে যেহেতু এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাই মানুষের কাছে সিমপ্যাথি আদায় করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজধর্ম পালন করছেন, এরকম একটা ভাব দেখাতে কিছুদিনের জন্য “তিনি কাউকে ছাড় দেন না” এই রকম একটা বিষয় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেও চেষ্টা করতে পারেন। তবে কি হবে, তা সময় বলবে। যার দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্যবাসী।