প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বৃত্তের একজন মানুষ। পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষকর্তা হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে খুব পছন্দ করেন বলেই শোনা যায়। কিন্তু এবার সেই রাজীব কুমারকে নিয়ে কি অসন্তোষ তৈরি হয়েছে প্রশাসনের মধ্যে? তাকে যেভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, হলোটা কি? যিনি প্রশাসনের অত্যন্ত শীর্ষ কর্তা বলে পরিচিত, যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন, তাকে হঠাৎ দায়িত্ব থেকে সরানোর পেছনে কি কোনো বড় কারণ রয়েছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি আর আস্থা রাখতে পারছেন না রাজীব কুমারের ওপর?
জানা গিয়েছে, এতদিন রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে থাকার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের প্রধান সচিবের দায়িত্বে ছিলেন রাজীব কুমার। কিন্তু এবার সেই দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের এই সচিব পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অনুপকুমার আগরওয়ালকে। আর এখানেই প্রশ্ন, নিশ্চয়ই রাজীব কুমারের সঙ্গে কোনো একটা বিষয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তা না হলে তাকে হঠাৎ এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে কেন? বারবার করে বিরোধীরা এই রাজীব কুমারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় তার জন্য ধর্না পর্যন্ত দিয়েছিলেন। ফলে তাকে তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের প্রধান সচিবের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে বড় কোনো রসায়ন রয়েছে কিনা, তার রহস্য উন্মোচন করতে ব্যস্ত বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যখন যাকে প্রয়োজন হয়, তিনি ব্যবহার করেন। আর যখন প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়, তখন তাকে ছুড়ে ফেলে দেন। হয়ত রাজীব কুমারকে এখন তার প্রয়োজন নেই। কারণ তিনি পুলিশ প্রশাসন পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছেন। যার ফলে মুখ পুড়ছে নবান্নের। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই এবার রাজীব কুমারকে একটি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে তাকে গুরুত্বহীন করার প্রচেষ্টা শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এসব নিয়ে মানুষ কখনও ভাবিত নয়। আগামী দিনে ২০২৬ এর নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সমূলে নবান্ন থেকে উৎপাটিত করবে জনতা বলেই দাবি করছে গেরুয়া শিবির।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এর পেছনে অন্য একটি কারণ থাকতে পারে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বর্তমানে লাগাতার প্রশ্ন উঠছে রাজ্য জুড়ে। পুলিশের যে সক্রিয়তা এবং নিষ্ক্রিয়তা, তা পক্ষপাত মূলক বলে দাবি করছে বিরোধীরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ বিরোধীদের ওপর নির্যাতন করলেও তৃণমূলের নেতারা যদি সেই পুলিশকে হুমকি দেয়, তাহলে তারা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। ফলে সব দিক থেকেই পুলিশের ব্যবস্থা সবথেকে বড় প্রশ্ন চিহ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রাজ্যের বুকে। আর সেই বিষয়টি উপলব্ধি করেই পুলিশের দিকটায় যাতে ঠিকমত দেখভাল করতে পারেন রাজীব কুমার, তার জন্যই তাকে এই তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের প্রধান সচিব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।