প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বীরভূমের বেতাজ বাদশা বলে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল। তিনি সম্প্রতি বোলপুরের আইসিকে যে কদর্য ভাষায় হুমকি দিয়েছেন, যে অশ্লীল গালিগালাজ করেছেন তার মা বউ তুলে, তারপর এখনও পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার না করা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজ্যবাসী। পুলিশের পক্ষ থেকে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হওয়ার পরেও কেন তিনি বাড়িতে বসে আছেন, কেন তাকে বাড়ি থেকে তুলে আনতে পারছে না এই রাজ্যের অপদার্থ পুলিশ, সেই প্রশ্ন উঠছে বিরোধীদের মধ্যে থেকেও। তবে এসব এখন অতীত। অনুব্রত মণ্ডলও নাকি নিশ্চিত যে, তাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ গ্রেফতার করবে না। কিন্তু এতটা নিশ্চিত তিনি কি করে হচ্ছেন? এদিন সেই ব্যাপারেই ভয়ংকর তথ্য ফাঁস করে দিলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।

কেন এখনও অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার নয়, সেই প্রশ্ন অগ্নিমিত্রা পালকে করতেই তিনি রীতিমত বোমা বর্ষণ করেন। বিজেপির এই দাপুটে বিধায়ক বলেন, “আজকে ১০০ ঘন্টা হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ মন্ত্রী। আর আজকে পুলিশের মা-বউকে অপমান করেছে, কোনো অ্যাকশন হয়েছে? অ্যাকশন হয়নি। কারণ অনুব্রত মণ্ডল জানে, এই পুলিশ তার কাচকলা করবে। আর মমতা ব্যানার্জির অনেক গোপন খবর উনি জানেন। কোথায় কোথায় বীরভূম থেকে টাকা গেছে, আর কি হয়েছে, সেটা অনুব্রত জানে। আর অনুব্রত এটাও জানি যে, মমতা ব্যানার্জি তাকে অ্যারেস্ট করতে পারবে না।”

আর অগ্নিমিত্রাদেবীর এই বক্তব্যের পরেই বিরোধীরা বলছেন যে, তিনি ঠিক কথাই বলেছেন। অনুব্রত মণ্ডল তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত স্নেহভাজন। এর আগেও তিনি পুলিশকে হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু তখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার হয়ে ব্যাটিং করেছেন। তার মাথায় নাকি অক্সিজেন কম যায় বলেছেন। অনুব্রত মণ্ডল এতটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গুরুত্ব পায় যে, কোর কমিটির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় হওয়ার পরেও তিনি সেই অনুব্রত মণ্ডলকেই ফোন করেন। আসলে কোথাও একটা কোনো গোপন বোঝাপড়া তো দিদি এবং ভাইয়ের মধ্যে রয়েছে। আর সেই কারণেই ভাই এত বড় কুকীর্তি করার পরেও কোনোমতেই যাতে তাকে গ্রেপ্তার হতে না হয় তার জন্য সব রকম প্রচেষ্টা এবং কৌশল দিদি প্ল্যানিং মারফত ভাইয়ের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন এবং সেই মতই কাজ করে যাচ্ছেন কেষ্ট মন্ডল। কারণ, দিদির মনেও ভয় রয়েছে, যদি আমার কোনো গোপন তথ্য গ্রেফতার হওয়ার পর ফাঁস করে দেয় কেষ্ট মন্ডল, তাহলে আমার কি হবে! তাই ভাইকে যতটা সম্ভব, এত বড় অপরাধ করার পরেও পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, অনুব্রত মণ্ডল যে জঘন্য কাজ করেছেন, সেই কাজ যদি বিরোধীদের কেউ করতেন বা রাজ্যের সাধারন মানুষ করতেন, তাহলে তার বাড়িতে গিয়ে পুলিশ তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিত। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে সেই কাজ করার মত ক্ষমতা পুলিশের হচ্ছে না। হয়ত পুলিশের ইচ্ছে আছে, কিন্তু ওপরতলার নির্দেশ নেই। সেই কারণে পুলিশ আধিকারিকদের হাত-পা বাঁধা। তবে কেন ওপরতলা নির্দেশ দিচ্ছে না, এবার সেই ব্যাপারেই যে গোপন তথ্য অগ্নিমিত্রাদেবী ফাঁস করে দিলেন, তা সত্যি হলেও হয়ে থাকতে পারে। কারণ গোপন একটা বোঝাপড়া নিশ্চয়ই দুজনের মধ্যে রয়েছে। তা না হলে রাজ্যবাসীকে দেখানোর জন্য হলেও অনুব্রতকে গ্রেফতার করে তিনি রাজধর্ম পালন করছেন, এমনটা প্রমাণ করানোর জন্য একটা বার্তা দিতে পারতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়‌। কিন্তু সেটাও যখন তিনি এতদিনে দিলেন না, তখন বোঝা যাচ্ছে, ভেতরে রয়েছে অন্য সমীকরণ বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।