প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট– বাংলায় নির্বাচন মানেই অশান্তি, বাংলায় নির্বাচন মানেই সন্ত্রাস। এটা দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে রাজ্যবাসী। হাতে আর এক বছরেরও কম সময়ে রয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের। আর তার আগে পানিহাটিতে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ি থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর এই ঘটনার পরেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন যে, বিধানসভা নির্বাচনের এখনও বেশ কিছু মাস সময় রয়েছে। কিন্তু তার আগে থেকেই তৃণমূল শুরু করে দিয়েছে, অস্ত্র মজুতের পালা। তবে প্রত্যেকবার ভোটে তৃণমূল একতরফা আক্রমণ করলেও, এবার কিন্তু খেলাটা অন্যরকম হবে। এবার তৃণমূল যদি আক্রমণ করতে আসে, তাহলে বিজেপিও ছেড়ে কথা বলবে না। এদিন তেমনটাই জানিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

এদিন অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে সুকান্ত বাবুকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে সুকান্তবাবু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, এই সমস্ত কিছু বিধানসভা ভোটের জন্য এখন থেকেই মজুত করা হচ্ছে। তৃণমূল এই সমস্ত কাজ করছে। তবে এবার যদি তৃণমূল গুলি চালায়, তাহলে সিআরপিএফ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী যা করার করবে। কিন্তু তার পাশাপাশি বিজেপিও ছেড়ে কথা বলবে না।তবে অনেকের মধ্যে এটাও প্রশ্ন যে, এর আগেও তো নির্বাচনের আগে বিজেপি এরকম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে নির্বাচনের দিন দেখা গিয়েছিল যে, তৃণমূলের সন্ত্রাসের ফলে কার্যত ঘরে ঢুকে গিয়েছিল বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা। তৃণমূল যে পরিমাণ সন্ত্রাস করেছিল রাজ্যের বিভিন্ন দিকে, তাতে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে না পারার কারণেই তারা ভোট লুট করে ক্ষমতা দখল করেছে বলেই অভিযোগ তাদের ।

তাই সেক্ষেত্রে এবার কোন ব্যতিক্রম খেলা খেলবে গেরুয়া শিবির? শেষ পর্যন্ত কি নিজেদের কর্মীদের ময়দানে রাখতে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে? একাংশ বলছেন, এবার বিজেপির কাছে মরণ বাচন লড়াই। ২০২৬-এ যদি তারা রাজ্যে ক্ষমতায় না আসতে পারে, তাহলে আগামী দিনে তাদের আর ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ নেই। তাই তৃণমূল সন্ত্রাসের আশ্রয় নেবে, সেটা তারা খুব ভালো মতই জানে। তবে বিজেপিকে এখন সেই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। আর সেই প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ যে বিজেপিও করছে, তারাও যে তৃণমূলকে জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি, তা সুকান্তবাবুর এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠলো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল কংগ্রেস খুব ভালো মতই জানে, তারা রাজ্যে যে সমস্ত পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে, তাতে শান্তিপূর্ণ ভোট হলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তাই যেভাবেই হোক, সন্ত্রাস করে ময়দানে টিকে থাকার চেষ্টা করে শাসক দল বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। আর শাসক দলের সেই সন্ত্রাসের কাছে মাথা নত করে শেষ পর্যন্ত ময়দান ছেড়ে দেওয়ার কারণেই বিজেপি যদিও বা ভোট পায়, তথাপি সেই ভোট চলে যায় তৃণমূলের দিকে। তবে নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ রাজ্যে এসে যে সুর বঙ্গ বিজেপিকে বেঁধে দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট যে, এবার বিজেপিকে ২০২৬ এর জন্য শেষ লড়াইটা করতে হবে বাংলার বুকে। তাই সন্ত্রাসের কাছে মাথা নত করলে কোনোমতেই এই লড়াই করা সম্ভব নয়। ফলে তৃণমূলের চোখে চোখ রেখে তাদের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে যতই তারা অস্ত্র মজুত করে বিজেপিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করুক না কেন, তৃণমূল ইট ছুঁড়লে তারাও যে পাটকেল ছোঁড়ার জন্য তৈরি, তা সুকান্তবাবুর বক্তব্যে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।