প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
আজ রাজ্য জুড়ে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দীঘাতে প্রথমবার রথযাত্রা পালন করতে আগেভাগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন। যদিও বা সেটা মন্দির নয়, শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বলে বারবার করে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। আর এসবের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী যখন রথের রশিতে টান দিচ্ছেন, ঠিক তখনই তার দলের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে সামনে চলে এসেছে বড় ঘটনা। যেখানে গত ২৫ জুন কলকাতার আইন কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই এক দাপুটে নেতা মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আবারও সরকারি হাসপাতালের পর শিক্ষাঙ্গনে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। অনেকেই আরজিকরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছেন। আর এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী দীঘায় রথের রশিতে টান দিলেও, যে পাপ এই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে, যেভাবে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, যেভাবে মহিলারা অত্যাচারিত হচ্ছেন, তাতে সেই পাপ মুখ্যমন্ত্রী কোনোভাবেই খন্ডন করতে পারবেন না এবং সেই পাপের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন না বলেই জানিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
বলা বাহুল্য, এদিন দক্ষিণ কলকাতার এক আইন কলেজে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতা জড়িত এই খবর সামনে আসার পরেই রীতিমত হইহই রব পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। আরজিকরের পর আবারও একটি ঘটনা সামনে চলে আসায় শাসককে ছেড়ে কথা বলছে না বিরোধীরা। আর বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী যখন দীঘাতে রথযাত্রা পালন করছেন, ঠিক তখনই তাকে খোঁচা দিতে ছাড়লেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। আরজিকর থেকে শুরু করে সম্প্রতি কালীগঞ্জে যেভাবে এক নিরীহ নাবালিকাকে বোমা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে এবং তারপর যেভাবে আবার এই এক আইন কলেজে ছাত্রীকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠলো, তাতে এই রাজ্যের বর্তমান শাসক দলকে অপদার্থ বলে আখ্যা দিলেন তিনি।
সুকান্তবাবু বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখুন, যাদের নাম এসেছে, তারা নির্ঘাত তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সংযুক্ত হবে। তারা শিক্ষাক্ষেত্র গুলোকে এভাবেই নষ্ট করছে। মেয়েদের সুরক্ষা নেই। আরজিকর কান্ডের পর তো তা প্রমাণ হয়ে গেছে। রাজ্যের টপ মেডিকেল কলেজগুলির মধ্যে একটিতে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে, যেখানে আইনের শিক্ষার্থীরা তৈরি হয়, সেখানেই আইন ভাঙ্গা হচ্ছে। তাহলে রাজ্যের অবস্থাটা কি? এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা সামলান। তারপরে তার এই যে অপদার্থতা, তিনি যতই জগন্নাথ দেবের রথ টানুন না কেন, কালীগঞ্জে মেয়েকে মারা হচ্ছে বোমা দিয়ে, কোথাও মেয়ের ইজ্জত লুট করা হচ্ছে, আরজিকরে অভয়াকে ধর্ষণ করে খুন করা হচ্ছে। এই পাপের হাত থেকে উনি বাঁচবেন না।”
বিরোধীদের দাবি, সঠিক কথাই বলেছেন সুকান্তবাবু। রাজ্যজুড়ে যে অনাচার, যে অত্যাচার চলছে, তা বেশিদিন সহ্য করা যায় না। এই রাজ্যের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ২০২৬ এই সরকারকে সরানোর ব্যাপারে। কিন্তু তারপরেও যারা দোলাচলে ছিলেন, শিক্ষাঙ্গনে ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ ঘটনার পর তাদের চোখটাও খুলে গেল। অনেকেই ভেবেছিলেন, আরজিকরের পর হয়ত এই রাজ্যের প্রশাসন শিক্ষা নিয়েছে, তারা আর একটিও মহিলাদের অসম্মান করার মত ঘটনা ঘটতে দেবে না। কিন্তু কিসের কি? যেখানে রক্ষকই ভক্ষকের মত আচরণ করে, যেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতাই একজন সাধারণ ছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হন, সেখানে এর দায় যে তৃণমূল সুপ্রিমো হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে এবং অবিলম্বে এই সমস্ত ঘটনার জন্য তাকে পদত্যাগ করতে হবে, সেই ব্যাপারে সোচ্চার হতে শুরু করেছে বিরোধীরা।