প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের পুলিশ যে সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে, তা আজকের ঘটনার পর আরও স্পষ্ট হয়ে গেল। যেখানে নবান্ন অভিযান ছিল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন অভয়ার পরিবার। কিন্তু সেখানে যেভাবে পুলিশের লাঠি দ্বারা আগত হলেন অভয়ার মা, তাতেই বোঝা গেল যে, এই রাজ্যের প্রশাসন এতটাই অমানবিক হয়ে গিয়েছে যে, যারা নিজেদের মেয়েকে হারিয়েছে, যারা এক বছর ধরে যন্ত্রনার মধ্যে রয়েছে, তাদেরকেও আক্রমণ করতে এরা দুবার ভাবছে না। অভয়ার পরিবারের তো নবান্ন দখল করা বা চেয়ার দখল করার উদ্দেশ্য নয়‌। তারা বিচারের দাবি নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও যে ঘটনা ঘটে গেল, তাতেই স্পষ্ট যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন আন্দোলনকে ঠিক কতটা ভয় পান! যে আন্দোলনের গর্ভে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম হয়েছে বলে তার দলের নেতা নেত্রীরা দাবি করেন, সেখানে বিচারের দাবি নিয়ে যে অভয়ার পরিবার যাচ্ছিল নবান্নের উদ্দেশ্যে, মাঝ পথেই কেন তাদের ওপর আক্রমণ নেমে এলো, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিরোধীদের পক্ষ থেকেই।

বলা বাহুল্য, এদিন নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় অভয়ার পরিবার। তবে সেই অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে আটকানোর জন্য পুলিশের চেষ্টা কমতি ছিল না। পুরো শহর জুড়ে যেন যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল প্রশাসন। যেভাবেই হোক, নবান্নের উদ্দেশ্যে যাতে কেউ যেতে না পারে, তার জন্য বড় বড় গার্ডরেল দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নবান্ন অভিযানে পুলিশ যে দু-একটা লাঠিচার্জ করবে, সেই ব্যাপারে অনেকেই নিশ্চিত ছিল। কিন্তু কেউ কল্পনা করতে পারেনি যে, এই রাজ্যের পুলিশ অভয়ার পরিবারকেও হেনস্থা করবে। শেষ পর্যন্ত যাদের মেয়ের বিচারের দাবিতে মা-বাবা এতদিন ধরে যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন, যারা আজ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন, সেই অভয়ার মায়ের হাতের শাঁখা ভেঙে গেল পুলিশের লাঠিচার্জের ফলে। এমনকি পুলিশ এতটাই সীমারেখা অতিক্রম করেছে যে, সেই অভয়ার মাকে লাঠি দিয়েও মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। যেখানে তার কপাল ফুলে গিয়েছে বলেই খবর।

ইতিমধ্যেই অভয়ার মা কাঁদতে কাঁদতে এই পুলিশের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। আর সেই চিত্র দেখেই গোটা রাজ্যবাসী রীতিমত গর্জে উঠছেন। সকলের একটাই বক্তব্য যে, এই পুলিশ এত অমানবিক কি করে হতে পারে? যারা বিচার দিতে পারে না, যারা একটি মেয়েকে সরকারি হাসপাতালের মধ্যে সুরক্ষা দিতে পারে না, তারা এত নির্লজ্জ কি করে হয়? আজকে অভয়ার মাকেও যেভাবে হাতের শাঁখা ভেঙে দেওয়া হলো, যেভাবে তার কপাল ফুলিয়ে দেওয়া হলো, এটা কোন সভ্য সমাজের পরিচয়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেন যে, তার চেয়ারের নাকি কোনো লোভ নেই! তাহলে যে মেয়েটা এক বছর আগে প্রাণ হারালো, যে মেয়েটাকে সরকারি হাসপাতালের ভেতর মেরে ফেলা হলো, তার মা-বাবার বুকে যে যন্ত্রনা এতদিন ধরে ছিল, তারা যেভাবে রাস্তায় আজকে নেমেছিলেন, তাতে সেই মায়েরও যেভাবে হাতের শাঁখা ভেঙে দিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ এবং তার কপালেও যেভাবে আঘাত করা হলো, তাতে তৃণমূলের বিদায় ঘন্টা যে আজ থেকেই আরো পাকাপাকিভাবে বেঁজে গেল, তাতে নিশ্চিত গোটা রাজ্যবাসী।