প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট–
আজ বাম এবং কংগ্রেসের ১০ টি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে গোটা দেশজুড়ে চলছে ধর্মঘট। তবে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যত ধর্মঘট হয়েছে, যত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিরোধী দলগুলো, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তার বিরোধিতা করে সরকারি অফিসে হাজিরা বাধ্যতামূলক, এমন নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। আর আজকের ধর্মঘটকেও সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ করে দিতে সরকারি অফিসগুলিতে যাতে ১০০ শতাংশ হাজিরা থাকে, তার জন্য নবান্নর পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে, ধর্মঘটের দিন কোনো কর্মী যদি অফিসে উপস্থিত না হন, তাহলে তার একদিনের বেতন কাটা যাবে।
প্রসঙ্গত, আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় বনধ সমর্থনকারীরা বনধকে সফল করতে রাস্তায় নেমেছেন। তবে সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই কড়া নির্দেশিকা জারি করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্য সরকার এবং সরকার পোষিত সমস্ত অফিস আজ খোলা থাকবে। এক্ষেত্রে কোনো কর্মী ক্যাজুয়াল লিভ নিতে পারবেন না। এমনকি আজ যদি কেউ অফিসে উপস্থিত না হন, তাহলে তার কর্মজীবন থেকে এই দিনটি বাদ যাবে। তবে যদি কেউ আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন, অর্থাৎ ৮ জুলাইয়ের আগে যদি কেউ শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছুটি নেন, তাহলে তাদের ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এককালে এই রাজ্যে বনধের সংস্কৃতি থাকলেও তৃণমূল সরকারে আসার পর সেই প্রবণতা অনেকটাই কমেছে। যখনই বিরোধীরা বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বনধের ডাক দিয়েছে, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, তখনই পরিস্থিতিকে সচল রাখতে বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় থেকেছে প্রশাসন। সরকারি বাসের বাড়তি পরিষেবা থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ এমনকি সরকারি অফিসগুলিতে কর্মচারীদের হাজিরা বাধ্যতামূলক করেছে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে বনধের জন্য প্রচুর মানুষের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার প্রবণতাকে আটকাতেই যে সরকারের এই পদক্ষেপ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে সরকারের এই পদক্ষেপকে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বাম এবং কংগ্রেস শিবির। তাদের ডাকা ধর্মঘটকে আটকানোর জন্য সরকারের এইভাবে ফরমান জারি করে নির্দেশিকা আসলে গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ বলেই দাবি করছেন তারা। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য, কেউ মন থেকে এই ধর্মঘটকে সমর্থন করলেও সরকার তাদের অফিসে আসতে বাধ্য করছে। আর এভাবেই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নেওয়া হচ্ছে। মানুষ নিজেদের অধিকার আদায় করতে ধর্মঘটের রাস্তা বেছে নিয়েছে। কিন্তু তারপরেও তাকে ভেস্তে দিতে এবং গায়ের জোরে এই বনধকে ব্যর্থ করার জন্য সরকারের ভয় দেখানোর কৌশল মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় বলেই দাবি বিরোধীদের।