প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এতদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী, জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা ইত্যাদি নানা অভিযোগ তুলতো বিরোধীরা। কিন্তু বাস্তবে যে তৃণমূল কংগ্রেস এরকম কোনো কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তা কেউ বিশ্বাস করতে পারেনি। তবে এবার রাজ্যের বুকে যে ধরনের ঘটনা ঘটলো, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, সত্যিই কি জঙ্গি যোগ রয়েছে তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে? কিন্তু কি ঘটনা ঘটেছে! যার পরিপ্রেক্ষিতে এমন কথা বলা হচ্ছে?
জানা গিয়েছে, পানিহাটির এক তৃণমূল কর্মী, যার নাম নইম আলি, তার বাড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর তার মধ্যে যে স্টেনগান অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি মূলত কাশ্মীরের জঙ্গিরা ব্যবহার করে বলেই জানা যাচ্ছে। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, কাশ্মীরের জঙ্গিদের ব্যবহার করার স্টেনগান কেন এই তৃণমূল কর্মীর কাছে এলো? শুধু তাই নয়, যে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তিনি পানিহাটি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তবে তার বাড়িতে পুলিশ গিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করলেও, তিনি এখন এলাকা থেকে পলাতক বলেই খবর।
আর এই ঘটনার পরেই বিরোধীদের প্রশ্ন যে, যদি মনে কোনো ভয় নাই থাকবে, তাহলে কেন এই তৃণমূল কর্মী পালিয়ে গেলেন এলাকা থেকে? কেন তার পুলিশের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই? অনেকে এটাও বলছেন যে, কাশ্মীরের জঙ্গির কাছে যে অস্ত্র থাকার কথা, সেটা যদি এই রাজ্যের শাসক দলের কোনো কর্মীর কাছে থাকে, তাহলে তো তা অত্যন্ত ভয়ংকর এবং বিপদজনক সকলের জন্যই। তাহলে বিরোধীরা তো ঠিক কথাই বলে যে, তৃণমূল সন্ত্রাসবাদীদের প্রশ্রয় দেয়। যারা সন্ত্রাসবাদী, তারা নিজেদের কাজকর্মের সুবিধা করার জন্য তৃণমূলের ছাতার তলায় আশ্রয় নেই। কিন্তু শাসক দলের একজন কাউন্সিলরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে এত বড় কাজ এই তৃণমূল কর্মী করলেন, অথচ দলের কাছে কেন আগেভাগে খবর ছিল না? কেন তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক আগেভাগেই ছিন্ন করল না তৃণমূল, তা নিয়েও উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ। তিনি বলেন, “এই এলাকায় তৃণমূলকে টাকা না দিয়ে একটা ইটও গাঁথা যায় না। এইসব অস্ত্র দিয়ে তৃণমূল দিনের পর দিন সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। এখন পুলিশ সেখানে গিয়ে এগুলো উদ্ধার করে নাটক করছে। মানুষ সব জানে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্জুন সিংহ হয়ত ঠিক কথাই বলেছেন। পুলিশ এখন বুঝতে পারছে যে, এই সমস্ত অস্ত্র যদি থাকে, পরবর্তীতে যদি তা উদ্ধার হয়, তাহলে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা সামনে আসবে। তাই এখন সেই সমস্ত অস্ত্র উদ্ধার করে নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। তবে তৃণমূলের একজন কর্মী, যিনি নিজের বাড়িতে এত বেআইনি অস্ত্র রাখলেন, সেটা কতদিন ধরে মজুত ছিল, এতদিন কেন পুলিশের নজরে আসেনি, আরও কোনো অস্ত্র মজুদ রয়েছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।