প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
বাংলার আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, কোনোটাই যে ভালো অবস্থায় নেই, তা নতুন করে বলতে হবে না। গোটা রাজ্যবাসী বুঝে গিয়েছে যে, তৃণমূল সরকারের আমলে বাংলা সুরক্ষিত নেই। অন্তত তেমনটাই দাবি বিরোধীদের। কিন্তু যখনই বাংলা বিপদের মুখে পড়ে, তখনই কি করে কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপানো যায়, সেই চেষ্টা শুরু করে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই অভিযোগ তাদের। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে যখন ক্রমাগত বৃষ্টি হচ্ছে, ঠিক তখনই আরও একবার সেই বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরেই দায় চাপানোর মরিয়া চেষ্টা চালালেন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান। কি ঘটনা ঘটেছে? কেন এমনটা বলা হচ্ছে?

বলা বাহুল্য, বর্তমানে প্রবল বৃষ্টির ফলে বাংলার একটা অংশে আবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। প্রত্যেকবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী এবং স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাস্তবে তার কাজ না এগোনোর কারণে সেই এলাকা বারবার করে বন্যায় ভাপতে শুরু করে। আর সেই সমস্ত বিষয় নিয়েই বিধানসভায় বলতে গিয়ে ডিভিসি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি প্রত্যেকবার তিনি যেভাবে বন্যা আসলেই তাকে “ম্যানমেড” বলে আখ্যা দেন, এক্ষেত্রেও সেই কথাই শোনা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গলায়।

মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিভিসি না বলেই জল ছাড়ে। সেই কারণেই বন্যা হয়েছে। কথা না বলে বিহার, ঝাড়খন্ড জল ছেড়ে দেয়। সেই জলে প্লাবিত হয় বাংলা। ইন্দো- ভুটান রিভার কমিটিতে বাংলার কোনো প্রতিনিধি নেই। সেই কারণে ভূটানের জল ছাড়ায় বাংলার ক্ষতি হচ্ছে। ওই কমিটিতে বাংলার প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন।” পাশাপাশি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ঘাটাল নিয়ে কিছুই করেনি কেন্দ্র। বাংলায় থাকা দুই বন্দরে কোনো ড্রেজিং হয় না। সময়মত ড্রেজিং করলে বন্যা আটকানো সম্ভব।”

আর এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন যে, বারবার করে বন্যার জলে বাংলা ভেসে যাচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ডিভিসির ঘাড়ে দায় চাপিয়ে আর কত নিজে বাঁচার চেষ্টা করবেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী? নিজের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য আর কত কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করবেন তিনি? আসলে এই সরকার নিজেরা এতটাই অপদার্থ যে, সব ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করার চেষ্টা করে। তবে এই সমস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বেশিদিন রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারবেন না। বাংলার মানুষ তৃণমূল সরকারের অপদার্থতা সম্পর্কে অবগত হয়ে গিয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারই যখন বাংলার জন্য সব করে দেবে, তাহলে এবার বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্ষমতায় আসবে এবং তারপরেই বাংলা এই প্লাবন থেকে মুক্তি পাবে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।